তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বিরুদ্ধে উঠল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। একদিকে চলছে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আইনি লড়াই, অন্যদিকে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে (TMC Leader) । শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় স্ত্রীকে মারধর, পণের দাবি, শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের অভিযোগে ফের খবরের শিরোনামে উঠে এলেন নদিয়ার শান্তিপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুব্রত সরকার।
অভিযোগ, প্রথম স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর সেই সম্পর্কের কথা গোপন রেখে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন সুব্রত (TMC Leader) । নতুন বিয়ের পরেই শুরু হয় অত্যাচারের পর্ব। নির্যাতনের শিকার দ্বিতীয় স্ত্রী শান্তিপুর থানায় সুব্রতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুব্রতের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছেন তিনি।
দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী জানান, গত বছরের ২৩ মে তিনি সুব্রত সরকারকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তখন বাড়ির কেউ রাজি ছিল না। বিয়ের পরেই তিনি জানতে পারেন, সুব্রতের প্রথম স্ত্রী এবং দুটি সন্তান রয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি আরও জানান, সুব্রত সরকারের একাধিক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এবং তাঁর চোখের সামনেই দলের এক নেত্রীকে নিয়ে ঘরে সময় কাটাতেন। অভিযোগ, এসব নিয়ে প্রতিবাদ করতেই তাঁর উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। পরিবারের সদস্যরাও নাকি সেই নির্যাতনে হাত মিলিয়েছিলেন।
সুব্রতের (TMC Leader) স্ত্রী আরও জানান, তাঁকে নিয়মিত নানা অজানা ওষুধ খাইয়ে দুর্বল করে দেওয়া হতো। চাওয়া হতো পণের টাকা। এমনকি টাকা না আনতে পারলে চালানো হতো মারধর। কয়েক মাস পর তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। শেষে বাধ্য হয়েই বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসেন তিনি। এতদিন বাদে কেন অভিযোগ দায়ের করলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “সুব্রত একজন ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি। ভয়েই এতদিন কিছু বলতে পারিনি।”
শুধু দ্বিতীয় পক্ষ নয়, সুব্রতের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মায়ের অভিযোগও রীতিমতো গুরুতর। তিনি নিজেও তৃণমূলের নেত্রী, বাবলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। তাঁর দাবি, “মেয়ের পরপর দুই কন্যাসন্তান হওয়ার পর থেকেই অত্যাচার শুরু হয়েছিল। আমরা কিছু করতে পারিনি। দল থেকেও কোনও সহায়তা পাইনি।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তীর কথায়, “এটা শুধু শান্তিপুরের এক নেতার কাহিনি নয়, এটা গোটা তৃণমূলের চরিত্র। রাজ্যজুড়েই নেতাদের মধ্যে এই রকম দুর্ব্যবহার লুকিয়ে রয়েছে।” একই সুরে সিপিএম নেতা সৌমেন মাহাতো বলেন, “এই ঘটনা তৃণমূলের অভ্যন্তরের নৈতিক সঙ্কটের স্পষ্ট প্রতিফলন।”
তৃণমূলের পক্ষ থেকেও মুখ খুলেছেন দলের শান্তিপুরের এক নেতা সনৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এই ঘটনা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের হলেও, একজন ব্লক সভাপতির আচরণ সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি দেখেছি। নিশ্চয়ই দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব এ নিয়ে পদক্ষেপ নেবে।”
তবে ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সুব্রত সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বারবার ফোন কেটে দেওয়ার কারণে তাঁর বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।