বাঁকুড়ায় (Bankura) লাগাতার বর্ষণে বিপর্যস্ত জনজীবন। জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির দাপটে জেলায় ধসে পড়েছে হাজারেরও বেশি কাঁচা বাড়ি। ক্ষতির মুখে পড়েছেন বহু পরিবার। অথচ সামান্য ত্রিপলের জন্যও প্রশাসনের দরজায় বারবার ধরনা দিয়েও মিলছে না কোনও সহায়তা। ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রামবাসীরা (Bankura)।
বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরিস্থিতি বিশেষভাবে ভয়াবহ। সেখানে শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে, কারও মাথার চালা উড়ে গিয়েছে (Bankura)। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়দের বাড়িতে। যদিও প্রশাসনের তরফে বন্যার্তদের ত্রিপল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে সেই ত্রিপল এখনও মেলেনি বলেই অভিযোগ।
পঞ্চায়েত অফিসে একাধিকবার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে জানাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা (Bankura)। শুধু তাই নয়, স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার দরজায় গিয়েও ত্রিপল তো মেলেনি, উলটে পঞ্চায়েত কর্মীদের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের। ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা ঘেরাও করেন বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, পঞ্চায়েত প্রধানকে কার্যত ঘেরাও করে রেখে দেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, যদি অবিলম্বে সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ত্রিপল না দেওয়া হয়, তাহলে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফুলমণি সোরেন জানিয়েছেন, ১০০ জনের বেশি ব্যক্তি ত্রিপলের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে বিডিও অফিস থেকে সমীক্ষা করে পাঠানো হয়েছে মাত্র ২৫টি ত্রিপল। তাই সকলকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ফের সমীক্ষা করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে নতুন করে আবেদন জানানো হবে।
এই পরিস্থিতিকে ঘিরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপিও। সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য সৌভিক পাত্র কটাক্ষ করে বলেন, “রাজ্য সরকার খেলাধুলো, মেলা, উৎসবে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, অথচ সাধারণ মানুষকে একটা ত্রিপল দিচ্ছে না! এর থেকে বড় লজ্জা আর কিছু হতে পারে না।” তাঁর দাবি, অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে পঞ্চায়েত প্রধানকে।
বৃষ্টির তীব্রতা সাময়িক কমলেও, প্রশাসনিক উদাসীনতায় গ্রামের দুর্ভোগ কিন্তু ক্রমশ বাড়ছে।