উত্তরকাশীর (Uttarakhand) বারকোট-যমুনোত্রী সড়কের সিলাই বন্দ এলাকায় নির্মীয়মাণ একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই শ্রমিকের মৃতদেহ। রবিবার ভোরে ভয়াবহ মেঘভাঙার পর ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা (Uttarakhand) । প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেঘভাঙার সময় ঘটনাস্থলে মোট ৯ জন শ্রমিক নিখোঁজ হন। এখনও পর্যন্ত সাত জনের খোঁজ মেলেনি। উদ্ধার কাজ চলছে জোরকদমে।
উত্তরকাশীর (Uttarakhand) জেলাশাসক প্রসান্ত আর্য জানান, ঘটনাস্থলে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নেমেছে পুলিশ, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)-র সদস্যরা। প্রবল বৃষ্টির কারণে একাধিক স্থানে ধস নামার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে উদ্ধারকাজে বেশ বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষত সিলাই বন্দ অঞ্চলে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, মেঘভাঙার ফলে যমুনোত্রী (Uttarakhand) সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। ঘটনাটি ঘটে চরম বৃষ্টিপাতের সময়, যা এলাকায় আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনে। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ড রাজ্যের জন্য (Uttarakhand) রবিবার ও সোমবারের জন্য ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত এবং ঝড়ের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই আবহাওয়ার সতর্কতা মাথায় রেখে প্রশাসন চার ধাম যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গড়ওয়াল বিভাগের কমিশনার বিনয় শঙ্কর পাণ্ডে জানিয়েছেন, চার ধাম যাত্রা আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে এবং হরিদ্বারে তীর্থযাত্রীদের আটকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের।
রাজ্যের অন্যান্য পাহাড়ি এলাকাগুলিতেও টানা বৃষ্টির ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নন্দপ্রয়াগ ও ভানরোপানির কাছে জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় সোনপ্রয়াগ-মুনকাটিয়া রোডে ধস ও পাথর পড়ার কারণে পথ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এই রাস্তাটি কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ। বর্তমানে সোনপ্রয়াগ শাটল ব্রিজ ও মুনকাটিয়া স্লাইডিং জোনের কাছে রাস্তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। সেই কারণে যাত্রীদের সোনপ্রয়াগ এবং গৌরীকুণ্ডেই আপাতত থামিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায়।
সমগ্র অঞ্চলে জারি রয়েছে চরম সতর্কতা। প্রশাসনের একাধিক দল কাজ করছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং নিখোঁজ শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।