পাকিস্তান (Pakistan) সেনাবাহিনীর প্রধান আসিম মুনির ফের একবার ভারতের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলে সামরিক উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে দিলেন। করাচিতে পাকিস্তান নৌবাহিনী অ্যাকাডেমিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুনির দাবি করেন, ভারত অতীতে দু’বার বিনা উস্কানিতে পাকিস্তানের উপর সামরিক হামলা চালিয়েছে। তাঁর ভাষায়, এটি ভারতের “কৌশলগত দূরদর্শিতার ভয়াবহ অভাবের” ইঙ্গিত।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তানের (Pakistan) সেনাপ্রধান ভারতের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “পাকিস্তান বরাবরই শান্তিপূর্ণ পথ অনুসরণ করেছে। কিন্তু কোনও আগ্রাসন হলে এবার থেকে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”
তিনি পাকিস্তানকে (Pakistan) আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার এক ‘মেরুদণ্ড’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “ভারতের উস্কানিমূলক কার্যকলাপের মুখেও আমরা সংযম ও পরিপক্বতা দেখিয়েছি। তবু ভারত নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, যখন পাকিস্তান (Pakistan) জঙ্গি সন্ত্রাস নির্মূলের শেষ ধাপে।”
এই বক্তৃতাতেই মুনির ফের কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। দাবি করেন, “এই সময়ে আমাদের মনে রাখা উচিত, আমাদের কাশ্মীরি ভাইয়েরা ভারতের অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে লড়াই করছেন। তাঁদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানানোই আমাদের কর্তব্য।”

তিনি আরও বলেন, “কাশ্মীর পাকিস্তানের ‘জাগুলার ভেইন’ (জীবনের শিরা)। এই বিষয়টি আমরা কখনও ভুলব না। আমরা রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব ও কাশ্মীরিদের ইচ্ছার ভিত্তিতে ন্যায়সঙ্গত সমাধানের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব।”
এই বক্তব্য সামনে আসার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে কাশ্মীরের পহেলগামে। পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিরা সেখানে একের পর এক পর্যটককে নিশানা করে নির্মমভাবে হত্যা করে—মোট ২৪ জন পুরুষ পর্যটকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরে শোরগোল পড়ে যায়।
পাক সেনাপ্রধানের বিতর্কিত “জাগুলার ভেইন” মন্তব্য ও তার পরপরই ঘটে যাওয়া জঙ্গি হানাকে জুড়ে ভারতের তরফে নেওয়া হয় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ভারত সাফ জানিয়ে দেয়, ইন্দাস জলচুক্তি আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে—যার অর্থ, পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত জলধারায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পথ খুলে দিল ভারত।
এর পরেই শুরু হয় ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধুর’। এই অভিযান সরাসরি পাকিস্তানের মাটিতে অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটিগুলোকে টার্গেট করে। সীমান্তপারের ভেতরে ঢুকে ধ্বংস করে দেওয়া হয় বহু সন্ত্রাসী লঞ্চপ্যাড।