আসানসোলের (Asansole) বৈশালী পার্ক এলাকায় শনিবার মাঝরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হল একই পরিবারের তিন সদস্যের। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য, গৃহকর্ত্রী শিল্পী চট্টোপাধ্যায় (Asansole)। এই ভয়ানক দুর্ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল (Asansole) দক্ষিণ থানার অন্তর্গত বৈশালী পার্কে একটি দোতলা বাড়িতে বসবাস করতেন বাবলু সিং, তাঁর স্ত্রী শিল্পী চট্টোপাধ্যায়, শ্বশুর কেবল চন্দ ও শাশুড়ি গায়েত্রী চন্দ। তাঁদের (Asansole) পৈতৃক ভিটে ঝাড়খণ্ডের নিরসায়। এই দম্পতির একমাত্র পুত্র বাইরে হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন। শনিবার রাত গভীর হতেই আচমকা নিচতলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন এবং তৎক্ষণাৎ স্থানীয় বাসিন্দাদের খবর দেন (Asansole)।
আবাসনের বাসিন্দারা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকল বিভাগে। একটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। দমকল কর্মীদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, ঘরে থাকা চারজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা তখনই সংকটজনক ছিল।
তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে গৃহকর্তা বাবলু সিং, তাঁর শ্বশুর কেবল চন্দ ও শাশুড়ি গায়েত্রী চন্দ—এই তিনজনকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁদের শরীরে ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। গুরুতর দগ্ধ শিল্পী চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনার পর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অগ্নিদগ্ধ ঘর।
আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, শর্টসার্কিট কিংবা এয়ার কন্ডিশনার থেকে আগুন লাগতে পারে। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে ফরেনসিক টিম। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত চালাবেন।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কেউ কেউ এর পিছনে ষড়যন্ত্রেরও গন্ধ পাচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্তে কোনও রকম গাফিলতি রাখা হবে না। হাসপাতালেও গৃহকর্ত্রীর চিকিৎসা ও সুরক্ষায় রাখা হয়েছে বিশেষ নজর।
এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর এক ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল একটি পরিবার। ঘরে আগুন নয়, যেন জীবনের সব আলো নিভে গেল এক রাতেই।