ফ্রান্সের ডিজনিল্যান্ডে নকল বিয়ে আয়োজনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক ব্রিটিশ নাগরিককে (Fake Marriage)। অভিযুক্তের নাম জাসকরণ ঝাঝ, ওরফে জ্যাকি ঝাঝ। বয়স ৩৯ বছর। তিনি এক ৯ বছর বয়সি ইউক্রেনীয় শিশুকন্যার সঙ্গে “বিয়ে” করার নাটক সাজিয়েছিলেন (Fake Marriage) বলে অভিযোগ। ঘটনাটি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ফরাসি প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন প্যারিসের ডিজনিল্যান্ডে অবস্থিত ‘স্লিপিং বিউটি ক্যাসেল’-এ এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় (Fake Marriage)। সেখানে শতাধিক অতিথির বসার ব্যবস্থা, ব্যান্ড পারফরম্যান্স, কেক—সবকিছুই ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, পুরো এই ভুয়ো বিয়ের (Fake Marriage) আয়োজন করতে ঝাঝ খরচ করেন প্রায় ১.২১ কোটি টাকা (GBP ১,১১,০০০)। উদ্দেশ্য ছিল, নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য “ভাইরাল ভিডিও” বানানো।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্যারিস পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন এক ৫৫ বছর বয়সী অভিনেতা (Fake Marriage), যিনি জানিয়ে দেন যে ঝাঝ তাঁকে টাকা দিয়ে মেয়েটির “বাবা”র ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য ভাড়া করেছিলেন। তখনই বিষয়টি ফাঁস হয়।
ফরাসি প্রসিকিউটরদের দাবি, ঝাঝ লাতভিয়ার জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে এই বিয়ের আয়োজন করেন (Fake Marriage)। তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, বিশ্বাসভঙ্গ, অর্থ পাচার এবং পরিচয় চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ঝাঝ এর আগেও শিশু যৌন নিপীড়নের মামলায় যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডে দু’জন ১৫ বছর বয়সি কিশোরীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখার অপরাধে তিনি চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। মুক্তির পর আদালতের পক্ষ থেকে তাঁর উপর বিশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছর জুন মাসে তাঁকে ফের পূর্ব লন্ডনের একটি ডান্স স্কুলের বাইরে অল্পবয়সী মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে এবং অনুমতি ছাড়া ভিডিও ও ছবি তুলতে দেখা যায়, এরপর তাঁকে আবার গ্রেফতার করা হয়।
ফ্রান্সের মেও (Meaux) শহরে ঝাঝকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করেন এবং তাঁকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ঘটনায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসে, যখন জানা যায় যে ৯ বছর বয়সি শিশুকন্যা এবং তাঁর মা ইউক্রেনের নাগরিক। তাঁরা মাত্র দু’দিন আগে ফ্রান্সে এসেছিলেন। মেয়েটি কোনওরকম শারীরিক বা যৌন নিগ্রহের শিকার হয়নি, এবং চিকিৎসকদের মতে, জোর করে এই অনুষ্ঠানে তাকে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়নি।
তবে, শিশুটির মা-ও গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি দাবি করেন, তিনি চান তাঁর মেয়ে এক দিনের জন্য হলেও ডিজনির ‘প্রিন্সেস’-এর মতো অনুভব করুক।
অভিযুক্ত ঝাঝ একসময় হাউন্সলো (Hounslow), পশ্চিম লন্ডনে স্কুলের সামনে ঘোরাঘুরি করে নিজেকে হলিউড প্রযোজক বলে পরিচয় দিতেন এবং অল্প বয়সি মেয়েদের মদ্যপান করিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করতেন বলে ২০১৬ সালের মামলায় উল্লেখ ছিল।
এই ভয়ানক ঘটনার পর ব্রিটেন ও ইউরোপজুড়ে শিশু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শিশুপাচার এবং অনলাইন শিকারির বিরুদ্ধে নজরদারি আরও কঠোর করা হবে।