আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের নারকীয় ঘটনায় রাজ্য যখন এখনও তোলপাড়, তার রেশ কাটার আগেই ফের একবার রাজধানী কলকাতা কেঁপে উঠল আরেকটি নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় (Kasba Case)। এবার ঘটনাস্থল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান— দক্ষিণ কলকাতার একটি ল’কলেজ (Kasba Case)। অভিযোগ, কলেজ চত্বরে এক তরুণী ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের প্রাক্তনী ও অস্থায়ী কর্মী মনোজিৎ মিশ্র, যিনি স্থানীয়ভাবে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তাঁর সঙ্গে ধৃত আরও দুই অভিযুক্ত— প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং জায়েব আহমেদ (Kasba Case)।
মনোজিৎ মিশ্রের নাম উঠে আসার পর তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শাসক দল। জানা যাচ্ছে, ছাত্র পরিচালন সমিতির সুপারিশেই কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান তিনি (Kasba Case)। যদিও তিনি কলেজের প্রাক্তনী, তবুও ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে তাঁর প্রভাব ছিল প্রবল। অভিযোগ, এই প্রভাবই তাঁকে ক্যাম্পাসে অপরাধ সংগঠনের ‘সুযোগ’ করে দেয়।

এই ঘটনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে প্রবল প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ সরাসরি রাজ্য সরকার ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, ‘‘আর জি কর ঘটনার সময় ধর্ষকদের যে বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল, সেই একই বার্তা আবার দেওয়া হয়েছে। এই সরকার ধর্ষকদের পাশে দাঁড়ায়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচন নেই, রাতে মদের আসর, পর্নোগ্রাফির ব্যবসা চলছে ইউনিয়ন রুমে— এটাই তৃণমূলের চরিত্র।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিয়ে বলেন, ‘‘আর জি কর কাণ্ড থেকে কিছুই শেখেনি তৃণমূল সরকার। এবার আইনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই রাজ্যের হোম মিনিস্টার, অথচ একের পর এক অপরাধে চুপ। যতই রথ টানুন, কালীগঞ্জে বোমায় মেয়েকে হত্যা, অন্যত্র ধর্ষণ— এই পাপের বোঝা তাঁকে বইতেই হবে।’’
রাজ্যের বিরোধী দলগুলি দাবি করছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিকল্পিতভাবে অপরাধের আঁতুড়ঘরে পরিণত করেছে শাসক দল। আর জি করের অভয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পরেও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, অপরাধীদের রক্ষা করার প্রবণতা এবং রাজনৈতিক ‘আশ্রয়’-কে ঘিরে তৈরি হয়েছে চরম ক্ষোভ।
সামাজিক নিরাপত্তা, ছাত্র রাজনীতি ও প্রশাসনিক জবাবদিহি— সবকিছু নিয়েই ফের একবার প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার।