একটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Live-in Relation) একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে—লিভ-ইন (Live-in Relation) সম্পর্কে বিচ্ছেদ হলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিচ্ছেদের পর নারীদের জন্য নতুন জীবনসঙ্গী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, যা পুরুষদের ক্ষেত্রে অনেকটাই সহজ।
এই মন্তব্য করেন বিচারপতি সিদ্ধার্থের একক বেঞ্চ, যখন তিনি শান আলম নামের এক ব্যক্তিকে জামিন দেন, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক (Live-in Relation) সম্পর্ক স্থাপন করেন, পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট লিভ-ইন (Live-in Relation) সম্পর্ককে ‘আইনসিদ্ধ’ ঘোষণা করার পর থেকে এই ধরণের মামলা আদালতে হু হু করে বাড়ছে। বিচারপতি বলেন, “ভারতের মধ্যবিত্ত সমাজে লিভ-ইন (Live-in Relation) সম্পর্ক এখনও গৃহীত নয়। তাই এই ধরনের সম্পর্ক নারীদের জন্য বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
বিচারপতি আরও বলেন, “একজন পুরুষ এক বা একাধিক নারীর সঙ্গে লিভ-ইন (Live-in Relation) সম্পর্কে থেকে পরবর্তীতে সহজেই বিয়ে করে ফেলতে পারেন। কিন্তু একজন নারীর জন্য সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সমাজে নতুন জীবন শুরু করা অনেক বেশি কঠিন।”
আদালত এই মন্তব্য করেছেন এমন এক মামলায়, যেখানে বাদিনী অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্ত শান আলম তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে তিনি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩ (BNS) এবং পকসো আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর, সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছিল—যদি কোনো নারী দীর্ঘমেয়াদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকেন, তাহলে পরবর্তীতে সেই সম্পর্ককে “বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণ” বলে দাবি করা সহজ নয়। আদালতের মতে, এমন ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্ক শুধুমাত্র বিয়ের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতেই হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
এই পর্যবেক্ষণ একদিকে যেমন আইনি বিতর্ক উসকে দিয়েছে, তেমনি সমাজে লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে প্রচলিত ভাবনাতেও নতুন আলো ফেলেছে।