ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে ‘জয়’ দাবি করে ভারতের সাধারণ নাগরিক থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব পর্যন্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল ইরান (Iran)। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের (Iran) দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, এই যুদ্ধে ভারতের ‘সত্পর ও স্বাধীনতাপ্রেমী’ জনগণের নৈতিক সমর্থন এবং সংহতির বার্তা ইরানের জনগণের জন্য এক অনন্য সাহসের উৎস ছিল।
বিবৃতিতে (Iran) বলা হয়েছে, “জায়োনিস্ট শাসক ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনের মুখে ইরানের জনগণের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে, আমরা ভারতের সম্মানীয় নাগরিক, রাজনৈতিক দল, সংসদ সদস্য, এনজিও, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সংবাদমাধ্যমের কর্মী, সামাজিক কর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, যারা ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইসরায়েল একযোগে ইরানের (Iran) বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক কেন্দ্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির স্থাপনায় বড়সড় আক্রমণ চালায়। এরপরই শুরু হয় তীব্র পাল্টা হামলা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে (Iran) যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পরোক্ষভাবে এতে জড়িয়ে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশেষে ২৩ জুন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। তবে যুদ্ধবিরতির পরেও কিছু ঘণ্টা ধরে উভয় পক্ষ থেকে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া চলতে থাকে।

যুদ্ধ চলাকালীন ভারত সরকারের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংঘর্ষ প্রশমনের আহ্বান জানানো হলেও, বহু সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক নেতা ইরানের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী-সহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রকাশ্যে ইরানের পাশে থাকার কথা বলেন। সামাজিক মাধ্যমে বহু মানুষ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন।
ইরানের (Iran) দূতাবাস জানিয়েছে, “যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতের জনগণের নৈতিক সমর্থন, সংহতির বার্তা এবং শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে সক্রিয় অংশগ্রহণ ইরানবাসীর জন্য বড় প্রেরণা ছিল। এই সহমর্মিতা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের প্রতি ভারতীয় জনগণের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।”
এছাড়া, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে ইরানি দূতাবাস কড়া সমালোচনা করে।
বিবৃতির শেষে ইরান জানায়, “জাতির সংহতি ও ঐক্যই যুদ্ধ, সহিংসতা ও অবিচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ। ভারতের জনগণ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, তার জন্য আমরা আবারও গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”