দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (PFI)-কে ঘিরে। ভারতের হিন্দু সমাজের বিচারপতি, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক কর্মী সহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিশানা করে ভয়ংকর (Death List) ষড়যন্ত্র করছিল পিএফআই। এমনটাই জানাল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)।
এনআইএ-র তদন্তে উঠে এসেছে, শুধু কেরালায়ই ৯৭৭ জন হিন্দু নাগরিকের নাম ছিল ‘হিটলিস্ট’-এ (Death List) । আদালতে এক জমা নথিতে এই তথ্য পেশ করেছে সংস্থা। সূত্র বলছে, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত, সামরিক কায়দায় পরিচালিত, মৌলবাদী ও হিংসাত্মক সংগঠনের মতো কাঠামো নিয়েই PFI এই অভিযান চালাচ্ছিল (Death List) ।
এই হিটলিস্ট-গুলি মূলত RSS, বিজেপি ও অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে লক্ষ্য করে বানানো হয়েছিল (Death List) । এই তালিকায় জেলা স্তরের সংগঠক, মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য, এমনকি হিন্দু ধর্মের প্রবীণ অভিভাবকরাও ছিলেন। অনেকে বিচারপতি বা সরকারি আধিকারিক — যাঁরা পিএফআই-র ধর্মান্তরকরণ বা আইনি হস্তক্ষেপে বাধা দিয়েছিলেন, তাঁরাও লক্ষ্যবস্তু ছিলেন।
এনআইএ-র মতে, এই সন্ত্রাস কাঠামো ছিল তিন স্তরে বিভক্ত — ‘Reporter Wing’, যারা লক্ষ্য ব্যক্তিদের উপর নজরদারি চালাত, সামাজিক মাধ্যমে তাদের গতিবিধি খতিয়ে দেখত এবং ডোজিয়ার তৈরি করত। এরপর থাকত ‘Service Wing’ ও ‘Hit Squad’, যেখানে দরিদ্র ও সহজে প্রভাবিত যুবকদের নিযুক্ত করে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। কেরালার আলুভার পেরিয়ার ভ্যালি ক্যাম্পাস ও কান্নুরের নারথ এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছিল প্রশিক্ষণ শিবির, যেখান থেকে তরুণদের মানসিকভাবে চরমপন্থায় উদ্বুদ্ধ করে খুনে নামানো হতো।
এই ষড়যন্ত্র ফাঁস হয় পলক্কাডের শ্রীনিবাসন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ বিলাল ও রিয়াসুদ্দিনের জামিন বিরোধিতার সময়। তখনই সামনে আসে একাধিক হিটলিস্ট, যেগুলি বিভিন্ন অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সিরাজুদ্দিন নামের এক “Reporter Wing”-এর সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া যায় ২৪০ জনের একটি তালিকা। আরেক অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহাবের পার্সে পাওয়া যায় পাঁচজনের নাম — যার মধ্যে এক প্রাক্তন জেলা বিচারপতির নামও ছিল। অন্যদিকে, আরেক অভিযুক্ত মুহাম্মদ সাদিক, যিনি পরে স্বীকারোক্তি দেন, তাঁর কাছ থেকে মেলে আরও ২৩২ জনের নাম। এছাড়া আয়ুব টি.এ.-র বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হয় ৫০০ জনের আরও একটি তালিকা।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কেরালার অন্তত পাঁচজন আরএসএস নেতাকে ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
এনআইএ এই ষড়যন্ত্রকে এমন কিছু পূর্ববর্তী খুনের সাথেও জুড়েছে, যেমন পালক্কাডের শ্রীনিবাসন (২০২২), সঞ্জিত (২০২১), বেঙ্গালুরুর রুদ্রেশ (২০১৬), দক্ষিণ কন্নড়ের প্রভীণ নেট্টারু (২০২২), এবং তামিলনাড়ুর ভি. রামালিঙ্গম (২০১৯)। প্রতিটি হত্যাই ছিল পরিকল্পিত, কুপিয়ে খুন করা হয় প্রকাশ্য দিবালোকে — উদ্দেশ্য ছিল আতঙ্ক ছড়ানো ও সামাজিক মেরুকরণ ঘটানো।