কালীগঞ্জের মোলন্দা গ্রাম যেন বারবার ফিরছে রক্তাক্ত ইতিহাসে (Kaliang)। রাজনৈতিক হিংসা এই গ্রামে নতুন কিছু নয়। বছর কয়েক আগে এক নির্বাচনী উত্তেজনার সময়ই আক্রান্ত হয়েছিলেন কালীগঞ্জ (Kaliang) থানার ওসি সৌরভকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং এক সিভিক ভলান্টিয়র মহম্মদ আলি মোল্লা। গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল বোমার ভয়াল শব্দ, চোখে পড়েছিল মৃত্যু আর আতঙ্কের ছায়া। পুলিশের অভিযোগ, ওই ঘটনায় প্রায় শতাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিল, যাঁদের মধ্যে সিপিএমের পলাশি এরিয়া কমিটির সম্পাদক হকসাদ মণ্ডল-সহ ২০ জনের নাম FIR-এ উঠে আসে (Kaligang)।
সেই মোলন্দা গ্রাম ফের (Kaligang) উত্তপ্ত উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন। অভিযোগ, তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় প্রাণ হারায় ১০ বছরের এক কিশোরী (Kaligang)। স্থানীয়দের মতে, ৫০-৬০টি বোমা ছোড়া হয় মিছিল থেকে। গ্রামের বহু বাড়িতে হামলা চলে। শুধু তাই নয়, ১০ থেকে ১৫টি বাম সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে চারপাশ ঘিরে হামলা চালানো হয়।
নিহত শিশুর মা সাবিনা বিবি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, তিনি (Kaligang) হামলাকারীদের চেনেন, কিন্তু পুলিশ এখনও কেন সকলকে ধরছে না, সে প্রশ্নের উত্তর নেই তাঁর কাছে। প্রয়োজনে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবিও তুলেছেন।
সিপিএমের পক্ষ থেকে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই ঘটনাকে ‘নৃশংসতার নমুনা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “জয় পেলেও বীভৎস আচরণ করল তৃণমূল। বামপন্থী বলেই সংগঠিতভাবে হামলা করা হয়েছে।”
ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম মনোয়ার শেখ, তৃণমূলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা। তাঁকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, অতীতে তিনিও রাজনৈতিক হিংসায় আহত হয়েছিলেন।
ঘটনার দিন বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম ঘোষ নিজে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটরকে নিয়ে এলাকায় যান (Kaligang) এবং পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। তাঁর কথায়, পুলিশ এই ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
অন্যদিকে, বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ কড়া ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, “একটি শিশুর রক্তের দায় কার? যারা এই হিংসা ছড়াল, তারা যেন শাস্তি পায়।” পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “যদি সত্যিই বিজয় মিছিল থেকে কেউ অশান্তি করে থাকে, শাস্তি হোক। আবার যদি বিরোধীরা এই ঘটনায় অন্তর্ঘাতমূলক কিছু করে থাকে, তাও খতিয়ে দেখা হোক।”
তবে এলাকাবাসী বলছেন, আতঙ্কের রাত আর ফিরে এসেছে। ভোটের আগে যেমন ছিল হুমকি, এবার ফল ঘোষণার পর এল রক্তাক্ত বাস্তব।