নদিয়া জেলার (Nadia) এক কলেজছাত্রী প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য ধর্মের এক যুবককে বিয়ে করায়, তাঁর নিজের পরিবার সমাজ ও সম্মানের কথা তুলে ধরে মেয়েটির ‘শ্রাদ্ধ’ সম্পন্ন করেছে। এই ঘটনা যেন বাস্তব সমাজের এক করুণ ও চরম অবমাননাকর চিত্র তুলে ধরেছে (Nadia)।
পরিবার (Nadia) জানিয়েছে, মেয়েটি তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে এক অন্য ধর্মের যুবকের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। ফলে তাঁর জন্য পরিবারে আর কোনও জায়গা নেই—তিনি তাঁদের কাছে “মৃত”। তাই সামাজিক রীতি অনুযায়ী তাঁরা তাঁর ‘শ্রাদ্ধ’ করেছেন।
যুবতীর কাকা (Nadia) সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, “আমরা ওর বিয়ের আয়োজন করেছিলাম, কিন্তু ও একবারও আমাদের কথা শুনল না। যেভাবে পরিবারকে কলঙ্কিত করেছে, তাতে ও আর বেঁচে থেকেও আমাদের কাছে মৃত। তাই আমরা শ্রাদ্ধ করলাম।”
শুধু শ্রাদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি পরিবার। মেয়েটির মা (Nadia) জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁর সমস্ত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে পুরোহিত ডেকে নিয়ম মেনে মাথা মুণ্ডন, অন্নদান, ছবি রেখে মাল্যদান সবই করা হয়েছে।
মেয়েটি স্থানীয় এক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর জন্য পরিবার আগে থেকেই একটি বিয়ের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু সেই বিয়ে করতে অস্বীকার করায়, বাড়িতে একাধিকবার অশান্তি হয়। এরপরেই তিনি এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন।
কাকার কথায়, যুবকটি ভিন্ন ধর্মের হলেও সেই বিষয়টি তাঁদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। মেয়েটির বাবা বিদেশে থাকলেও, এই পদক্ষেপে তাঁরও সম্মতি আছে বলে দাবি করেন সোমনাথ বিশ্বাস।
অন্যদিকে, সূত্রের খবর অনুযায়ী, যুবতী বর্তমানে নিজের শ্বশুরবাড়ির কাছে রয়েছে এবং তাঁকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে এক আধিকারিক জানান, “ঘটনার কথা আমরা শুনেছি, তবে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় এবং কোনও পক্ষের তরফ থেকে লিখিত অভিযোগ না আসায় আইনত কিছুই করা যাচ্ছে না।”
এই ঘটনাটি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কীভাবে একবিংশ শতাব্দীতেও সমাজে ধর্ম, সম্মান ও নিয়ন্ত্রণের নামে নারীর ব্যক্তিস্বাধীনতাকে চাপা দেওয়া হয়।