ইসরায়েল ও ইরানের (Iran) মধ্যে চলমান উত্তেজনার দশম দিনে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২২ জুন) ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মজিদ মোসাইয়েবি নামের এক ব্যক্তিকে ‘মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে ফাঁসি (Iran) দেওয়া হয়েছে।
ইরানের (Iran) সরকারি বিচারবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘মিজান অনলাইন’ জানায়, মজিদ মোসাইয়েবি ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কাছে ‘সংবেদনশীল তথ্য’ সরবরাহের চেষ্টা করেছিলেন। আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়, এবং ইরানের (Iran) সর্বোচ্চ আদালত সেই রায় বহাল রাখে। এর পরেই তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এই ঘটনার মাধ্যমে ইরান (Iran) দেখিয়ে দিল যে, তারা দেশীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। এর আগেও ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তেহরানের (Iran) তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৩ জুন ইসরায়েলি হামলার পর থেকে ইরানজুড়ে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শনিবার, ইরানের (Iran) ক্বোম প্রদেশের পুলিশ জানায়, তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, “এরা জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো ও ইসরায়েলি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে আটক হয়েছে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার তেহরানে আরও ২৪ জনকে ‘ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে গ্রেফতারের কথা জানায় তাসনিম নিউজ এজেন্সি। শুধু তাই নয়, শুক্রবার একই সংবাদমাধ্যম জানায়, একজন ইউরোপীয় নাগরিককেও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। যদিও তার পরিচয় বা কোন দেশের নাগরিক, তা জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, ইরানে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে সন্দেহভাজন বহু ব্যক্তি আটক হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে অনেকেরই শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে। নরওয়ে ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘ইরান হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইরানজুড়ে কমপক্ষে ২২৩ জনকে ‘ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
এই ঘটনাগুলো ইরান-ইসরায়েল টানাপোড়েনের মধ্যেই এক নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে এবং পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হচ্ছে।