মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের ফোর্ডো, ইসফাহান ও নতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ হামলা চালানোর পর, ইরান (Iran) জানিয়েছে—এই হামলার ফলে কোনো ধরনের তেজস্ক্রিয়তা বা রেডিয়েশন ছড়ায়নি। দেশটির জাতীয় পারমাণবিক নিরাপত্তা কেন্দ্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলার পরপরই চালানো পরীক্ষায় তেজস্ক্রিয়তার (Iran) কোনো চিহ্ন মেলেনি। আশেপাশের এলাকায় বসবাসকারী জনগণের জন্যও কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই।
ইরানের (Iran) পারমাণবিক শক্তি কমিশনও নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘বর্বরোচিত’ হামলা সত্ত্বেও কোনো ধরনের বিকিরণ ছড়ায়নি এবং জনগণ সম্পূর্ণ নিরাপদ আছে। একইসাথে সংস্থাটি এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে—ইরানের (Iran) শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি কোনোভাবেই থামানো যাবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এটি আইনবহির্ভূত এক পদক্ষেপ, যা আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত কড়াভাবে নিন্দা করা এবং ইরানের (Iran) বৈধ অধিকারকে সমর্থন করা। এই জঙ্গল-নীতি বা বলপ্রয়োগের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সজাগ হওয়া এখন জরুরি।”
এদিকে, সৌদি আরবের পারমাণবিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে—মার্কিন হামলার পর তাদের অঞ্চলে বা উপসাগরীয় অন্য কোনো দেশে তেজস্ক্রিয়তার উপস্থিতি ধরা পড়েনি। এর মাধ্যমে আঞ্চলিক জনগণ কিছুটা স্বস্তি পেলেও, কূটনৈতিক উত্তেজনা একেবারেই কমছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই ঘোষণা করেন, ফোর্ডো, নতাঞ্জ এবং ইসফাহান (Iran) —এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ‘অত্যন্ত সফল’ হামলা চালানো হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ইরান যদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতের হামলা হবে আরও “বৃহৎ ও ধ্বংসাত্মক”।
এর জবাবে ইরানের (Iran) সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনেই কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “আমেরিকানদের এবার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জবাব ও ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।” বিশ্লেষকদের ধারণা, ইরান এখন যেকোনো সময় বড়সড় পাল্টা আক্রমণ চালাতে পারে।
অন্যদিকে, হামাস এই হামলাকে ‘নিষ্ঠুর আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছে এবং একে আন্তর্জাতিক আইনের ঘোর লঙ্ঘন বলেও নিন্দা জানিয়েছে।
ইসরায়েলের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, তারা সকল অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করেছে, কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে ইরান থেকে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ আসতে পারে।