আজকাল দ্রুত ওজন কমানোর আকাঙ্ক্ষায় অনেকেই দীর্ঘক্ষণ উপোস (Fasting) রাখছেন, বিশেষ করে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং নামে একটি ট্রেন্ডে নতুন প্রজন্ম ঝুঁকছেন। তবে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদদের পরামর্শ না নিয়ে যেভাবে খাবার এড়িয়ে চলা হচ্ছে, তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে (Fasting) । দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি হয়, যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
প্রথমেই ঘটে রক্তে শর্করার মাত্রার উল্লেখযোগ্য পতন। যখন শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায়, তখন মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, হাত কাঁপা, ঝিমুনি এমনকি অজ্ঞান হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় (Fasting) । ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য এই অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক। আরও একটি ভয়াবহ প্রভাব হলো পেশির ক্ষয়। দীর্ঘক্ষণ খাবার না পেলে শরীর প্রথমে গ্লুকোজ ও ফ্যাট ব্যবহার করে শক্তি সংগ্রহ করলেও অতিরিক্ত সময় না খেলে শরীর পেশির প্রোটিন ভেঙে শক্তি নিতে শুরু করে, যার ফলে পেশি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে (Fasting) ।
এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ উপোস রাখার ফলে বিপাকীয় হার ধীরে ধীরে কমে যায় (Fasting) । শরীর শক্তি সঞ্চয়ের জন্য বিপাক কমিয়ে দেয়, যা ওজন কমানোকে কঠিন করে তোলে এবং সামান্য খাবার খাওয়ার পর দ্রুত ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে শরীরের হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হয় (Fasting) । কর্টিসল, ইনসুলিন এবং থাইরয়েড হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন ঘটলে মহিলাদের মধ্যে মাসিক অনিয়ম, চুল পড়া, ত্বক শুষ্কতা এবং অন্যান্য হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা ও পেট ব্যথার মতো সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। মানসিক দিক থেকেও দীর্ঘ সময় না খাওয়া ক্ষতিকর। ব্লাড সুগারের হ্রাস মেজাজ খিটখিটে করে তোলে, মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি ও অবসাদ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এমন অবস্থা মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
তাই দ্রুত ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত উপায় অবলম্বন করা অপরিহার্য। যেকোনো ধরনের ডায়েট বা ফাস্টিং শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত, নাহলে শরীর ও মনের ক্ষতি হতে পারে।