‘যোগ্য’ তকমা পেলেও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে চাকরি হারাতে হয়েছে—এই অভিযোগকে সামনে রেখে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে এবার বিজেপির সদ্য নিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করলেন কয়েকজন চাকরিহারা (Teachers Protest)। শনিবার বিজেপির সল্টলেক দফতরে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুমন বিশ্বাস-সহ অন্যান্য ‘যোগ্য’ চাকরিপ্রার্থী (Teachers Protest)। প্রায় দীর্ঘ সময় ধরে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
এই সাক্ষাতের পরেই সুমন বিশ্বাস জানান, তাঁরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের সমস্যা জানাতে চান (Teachers Protest)। সূত্রের খবর, আগামী ১৮ জুলাই দমদমের সেন্ট্রাল জেলের মাঠে একটি জনসভায় অংশ নিতে পশ্চিমবঙ্গে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সুমনরা জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে সব চাকরিহারাদের নিয়ে সেই সভাতেই থাকবেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার যে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা চালু রেখেছে, তার ফলে আজ তাঁরা কর্মহীন। তাঁদের লড়াই একা সম্ভব নয়, তাই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একযোগে লড়াই ছাড়া পথ নেই (Teachers Protest)।
সুমনের কথায়, “চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত এই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে। সেই লড়াইয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো পাশে না দাঁড়ালে আমরা একা সফল হব না। শমীক ভট্টাচার্য আমাদের সময় দিয়েছেন, এই লড়াইয়ে তাঁরাও পাশে থাকলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।”
শমীক ভট্টাচার্য নিজেও জানান, চাকরিহারারা নিজেদের দুঃখ-অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও আলোচনা নিয়ে বিশদ কিছু জানাননি তিনি। তবে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে আছে বিজেপি। তবে এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙে রাঙানোর কোনও উদ্দেশ্য তাঁদের নেই বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলকে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেওয়ার পর প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আপাতত আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা ক্লাস নিতে পারবেন বলে নির্দেশ দিলেও, স্কুলে ঢোকার অনুমতি নেই গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই তীব্র আন্দোলনে নেমেছেন ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। তাঁদের স্পষ্ট দাবি—যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ফের পরীক্ষা নয়।
এসএসসি ইতিমধ্যেই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সেই পরীক্ষায় বসবেন না। কারণ, তাঁদের মতে, এর মধ্যে একাধিক বেআইনি ছাঁটাইয়ের ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে, আর রাজ্য সরকার এসব জেনেও নির্লিপ্ত।
এরই মধ্যে মোদীর পূর্ব ঘোষিত পশ্চিমবঙ্গ সফরের আগেই তাঁকে ঘিরে বড় বার্তা দিতে চাইছেন এই চাকরিহারা অংশ। তাঁরা চান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে নিজেদের বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরতে। এখন দেখার, তাঁরা মোদীর সঙ্গে সত্যিই দেখা করতে পারেন কি না, এবং এই বিষয়টি আগামী লোকসভা ভোটে কতটা প্রভাব ফেলে রাজ্যের রাজনীতিতে।