হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বাতিল হওয়া এসএসসি-২০১৬-র শিক্ষক নিয়োগে ‘যোগ্য’ হিসেবে বিবেচিত চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা (Teachers Protest) এখন ন্যায়ের খোঁজে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে একের পর এক দরজা ঠকাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তাঁদের একাংশ (Teachers Protest) পৌঁছলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের কার্যালয়ে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ সম্ভব হয়নি, তবে তাঁদের পক্ষ থেকে একটি সাত দফার স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, রবিবার (২৫ মে, ২০২৫) সকালে প্রায় ৫০ জন ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা (Teachers Protest) কালীঘাট থানায় যান। পুলিশের কাছে তাঁরা আবেদন করেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেতে চান। এই আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের (Teachers Protest) মধ্যে পাঁচজনকে একটি প্রতিনিধিদলের আকারে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের সরকারি বাসভবনে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
ওই প্রতিনিধিদলের (Teachers Protest) পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাট কার্যালয়ে একটি সাত দফা স্মারকলিপি পেশ করা হয়। তাতে ছিল মূলত এই দাবিই— যাঁরা একবার বৈধভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের পুনরায় পরীক্ষা ছাড়াই ‘যোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর স্মারকলিপিটি গ্রহণ করলেও, তাঁর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া বা প্রতিশ্রুতি এখনও পাওয়া যায়নি।
একই দিনে, ওই চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের আরেকটি প্রতিনিধি দল দেখা করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এবং বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল— আইনি দিক থেকে কীভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায় অক্ষত রেখেও নিজেদের চাকরি ফেরত পাওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পূর্বে মন্তব্য করেছিলেন, এসএসসি ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করলেই নির্দিষ্টভাবে বোঝা যাবে কারা ‘যোগ্য’ এবং কারা ‘অযোগ্য’। সেই মন্তব্যকে ভিত্তি করেই তাঁর দিকনির্দেশনা চেয়ে দেখা করেন চাকরিচ্যুতেরা।
প্রসঙ্গত, এর আগে তাঁরা প্রবীণ আইনজীবী ও বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। কিন্তু তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আদালতের রায় মান্য করতে হবে। পুনরায় পরীক্ষা ছাড়া ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়। সেই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা জানান, তাঁরা কোনওভাবেই ফের পরীক্ষা দিতে রাজি নন। তাঁরা একবার ‘যোগ্য’ হিসেবে পাশ করে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, দুর্নীতিতে জড়িত না থেকেও তাঁদের সঙ্গে ‘অন্যায়’ হচ্ছে বলেই দাবি তাঁদের।
এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ তাঁদের একমাত্র ভরসা— এমনই বলছেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন, তাঁদের দাবি না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে তাঁরা অগ্রসর হবেন।
