বৃহস্পতিবার উত্তাল হল বিকাশ ভবন চত্বর (Teachers Protest)। চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিকাশ ভবন ঘেরাও কর্মসূচি গ্রহণ করলে উত্তেজনা চরমে ওঠে (Teachers Protest)। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, গেট ভাঙচুর— চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে চলে বিক্ষোভ। চাকরিহারাদের (Teachers Protest) সাফ বার্তা, “আর একবারও পরীক্ষা নয়। আমরা অপরাধী নই। আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে কেন?”
সকাল থেকেই বিকাশ ভবনের তিনটি প্রধান গেট ঘিরে অবস্থান নেন চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা। চেষ্টা চলে ভবনের ভিতরে ঢোকার। পুলিশ প্রথমে বাধা দিলে প্রধান গেটের একাংশ ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে ভবনের শাটার নামিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। এই সময় এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন, ঘটে ধস্তাধস্তির ঘটনাও।
চাকরিহারাদের দাবির সুর চড়া
বিক্ষোভস্থল থেকেই আন্দোলনকারীরা জানান, “দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেব না। যদি দিতে হয়, মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, নেতা-মন্ত্রীরাও যেন পরীক্ষা দেন। আমরা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাইনি।” তাঁদের অভিযোগ, সরকার আলোচনার নামে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, পরীক্ষার প্রস্তুতি গোপনে শুরু হয়েছে। তাঁরা বলেন, “৭ বছর ধরে কাজ করেছি, কোনও অভিযোগ নেই। চাকরি গিয়েছে SSC ও সরকারের কারণে। আগে দায়ীরা নির্বাচনে দাঁড়াক, তারপর ভেবে দেখব পরীক্ষা দেব কি না।”
ওএমআর শিট প্রকাশের দাবিও
চাকরিহারাদের আরও দাবি, ওএমআর শিট প্রকাশ করে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা স্পষ্ট করুক সরকার। তারা চায়, ‘চোর’ শাস্তি পাক, নির্দোষরা চাকরিতে ফিরে আসুন। এক বিক্ষোভকারীর কথায়, “যাদের জীবনের দরজা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাদের কতদিন আটকে রাখা যাবে?”
সুপ্রিম কোর্টের রায়
গত ৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি— মোট প্রায় ২৬ হাজার জন কর্মী চাকরি হারান। তবে যাঁদের অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত হয়নি, তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি বজায় রাখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সঙ্গে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া মে মাসের মধ্যে শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সরকারের কাছে তাঁদের দাবি— রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে ন্যায্য বিচারের ব্যবস্থা হোক এবং অযোগ্যদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের স্কুলে ফিরিয়ে আনা হোক সসম্মানে।