চাকরিহারা শিক্ষকদের (Teachers Protest) সাম্প্রতিক আন্দোলন ঘিরে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার অভিযোগে নতুন মোড়। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, বিকাশ ভবনে অবরোধ (Teachers Protest) চলাকালীন একজন সন্তানসম্ভবা মহিলা ভেতরে আটকে পড়েন, এবং বারবার বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীদের উশৃঙ্খল আচরণে বাধা পান। সেই সময় মাইকে বারবার অনুরোধ করা হয় অবরুদ্ধদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে (Teachers Protest)।
তবে এবার পাল্টা অডিও প্রমাণ দিয়ে পুলিশের দাবি খণ্ডন করলেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের অন্যতম নেতা দাবি করেন, “আমরা ওই মহিলার পরিবার ও তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে অনুরোধও করেছিলাম।” এ নিয়ে ফোন কথোপকথনের অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন তাঁরা, যেখানে স্পষ্ট শোনা যায় আন্দোলনকারীরা বারবার মহিলাকে নির্দিষ্ট গেট দিয়ে বেরিয়ে আসতে বলেন।
একটি অডিওতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা জানান, “নীচে নেমে আবার ওপরে চলে এসেছি।” জবাবে আন্দোলনকারীরা বলেন, “আপনি তিন নম্বর গেটের পেছনের দিকে চলে আসুন। আমরা নীচে আছি।” আরেকটি অডিওতে ফোনের অপরপ্রান্তে এক মহিলা বলছেন, “নীচে তালা দিয়ে দিয়েছে।” জবাবে আন্দোলনকারী জানতে চান, “কে তালা দিয়েছে?” অন্দোলনকারীরা বলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি তাঁকে নিরাপদে নামিয়ে আনার। কেউ যদি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলে, তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।”
এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছিলেন, অবরোধের সময় বিকাশ ভবনের ভিতরে থাকা কর্মচারীদের থেকে ‘প্যানিক কল’ আসছিল। একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বাড়ি যেতে চাইছিলেন, কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাঁকে বাধা দিচ্ছিলেন। পুলিশ বারবার মাইকে ঘোষণা করেও সফল হয়নি।
সম্প্রতি চাকরিহারাদের আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ, আন্দোলনকারীদের আহত হওয়া ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা ও মানবিক দিক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রেক্ষিতেই গর্ভবতী মহিলাকে আটকে রাখার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক চরমে পৌঁছয়। এই অডিও সামনে আসার পর প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, কিংবা নতুন কোনও তদন্ত হয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
চলমান আন্দোলনের আবেগ ও চাপের মধ্যেও গর্ভবতী নারীর নিরাপত্তা নিয়ে এমন বিতর্ক প্রশাসনের প্রতি যেমন প্রশ্ন তোলে, তেমনই চাকরিহারাদের ওপর দায় চাপানোর যুক্তিকতা নিয়েও তৈরি করে নতুন বিতর্ক।