এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো ‘যোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীরা (Teachers Protest) এবার সাহায্য চাইলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তথা বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। রবিবার একদল প্রাক্তন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মী (Teachers Protest) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অসহায়তা ও ক্ষোভের কথা জানিয়ে আইনি পরামর্শ চান।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়েছে (Teachers Protest)। চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার কর্মী। আদালতের বক্তব্য, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে কোন প্রার্থীরা প্রকৃতপক্ষে যোগ্য, আর কারা অযোগ্য—তা নির্ধারণ করা কার্যত অসম্ভব। তাই প্যানেলের সকলকেই চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নতুন করে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে যোগ্যদের ফের চাকরি পেতে হবে (Teachers Protest)। কিন্তু তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বহু ‘যোগ্য’ প্রার্থী। তাঁদের প্রশ্ন, যদি তাঁরা কোনও দুর্নীতিতে জড়িত না থাকেন, যদি পরীক্ষা দিয়ে ও নিয়ম মেনে চাকরি পেয়ে থাকেন, তাহলে কেন তাঁদের ফের পরীক্ষা দিতে হবে?
এই ক্ষোভ থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন বহু চাকরিচ্যুত ‘যোগ্য’ কর্মী। আর এই পরিস্থিতিতেই তাঁরা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন। যিনি বিচারপতি থাকাকালীন থেকেই এসএসসি দুর্নীতির অনুসন্ধান ও কড়া পর্যবেক্ষণের জন্য চর্চায় ছিলেন। অভিজিৎ আগেও বলেছিলেন, ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করা হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে কারা সত্যিই যোগ্য ছিলেন। রবিবার তাঁর সঙ্গেই এ বিষয়ে আলোচনা করতে আসেন প্রাক্তন চাকরিপ্রাপ্তরা।
তাঁদের কথায়, “স্যারের সঙ্গে দেখা করে আমাদের যন্ত্রণার কথা জানালাম। আমরা নির্দোষ, তবু আমাদের একদিনে সবকিছু কেড়ে নেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী, সাংসদ—সবার কাছেই আমরা আমাদের কথা তুলে ধরব। কিন্তু ওএমআর শিটের প্রতিলিপি ছাড়া আমরা কিছুতেই প্রমাণ করতে পারছি না আমরা কীভাবে যোগ্য। সেই আইনি পথ খুঁজতেই স্যারের সঙ্গে আলোচনা করলাম।”
অন্যদিকে, প্রবীণ আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য স্পষ্ট বলেছেন, আন্দোলন করে লাভ হবে না। পরীক্ষা দিতেই হবে। এই মন্তব্যে হতাশ আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, “যেখানে যোগ্যতা প্রমাণ করেই আমরা চাকরি পেয়েছিলাম, সেখানে আবার পরীক্ষা কেন? তাহলে আগের পরীক্ষা মান্যতা পাচ্ছে না কেন?”
চাকরি ফেরতের দাবি নিয়ে যাঁরা আন্দোলনে রয়েছেন, তাঁদের একাংশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—নতুন করে কোনও পরীক্ষায় বসবেন না। তাঁদের এই অবস্থান আগামী দিনে রাজ্য-রাজনীতিতে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।