নতুন করে উত্তাপ ছড়াল বাংলার পাহাড় রাজনীতিতে। খাস কলকাতায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে হঠাৎ বৈঠকে বসলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার শীর্ষ নেতা বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। বুধবার রাতে কলকাতার নিজাম প্যালেসে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক চলে এই তিন নেতার মধ্যে। বৈঠক নিয়ে কোনও পক্ষই এখনও মুখ না খুললেও রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সূত্রের খবর, আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই বৈঠক, এবং মূল আলোচনা ছিল আসন সমঝোতা নিয়ে (Suvendu Adhikari)।
উল্লেখ্য, এর আগেও বিমল গুরুং ও বিজেপির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে রাজনীতিতে হইচই পড়েছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আলিপুরদুয়ারে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সভামঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন বিমল গুরুং। তখনও একপ্রকার রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “রাজনীতিতে সবই সম্ভব।”
পাহাড়ে বিজেপির সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের সম্পর্ক বরাবরই টালমাটাল। বিশেষ করে দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে সংঘাত লেগেই থাকে। এই পরিস্থিতিতে বিমল-শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) গোপন বৈঠক যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একদিকে যেমন পাহাড়ে প্রভাব খাটাতে মরিয়া বিজেপি, তেমনই গুরুংও চাইছেন পাহাড়ে নিজের হারানো জমি পুনর্দখল করতে। তাই রাজনীতির অঙ্কে এই বৈঠক ভবিষ্যতের বড় সমীকরণের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের পাহাড় আন্দোলনের সময় বড়সড় অশান্তির জেরে আচমকাই আত্মগোপনে চলে যান বিমল গুরুং। এরপর ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর কলকাতায় হঠাৎ প্রকাশ্যে আসেন তিনি। সল্টলেকের গোর্খা ভবনে প্রবেশ করতে না পেরে, কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ঘোষণা করেন তিনি। সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করে একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে লড়াইয়ের কথাও জানান গুরুং।
কিন্তু মাত্র কয়েক বছর পর পালটে গেল ছবিটা। ফের বিজেপি শিবিরে বিমল গুরুংয়ের সক্রিয় উপস্থিতি, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গোপন বৈঠক— এই মুহূর্তে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাহাড় রাজনীতিতে এক নতুন মোড় আনল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।
এখন দেখার, এই বৈঠক পাহাড়ের ভোট রাজনীতিতে কোন দিকে মোড় নেয় এবং বিজেপির সঙ্গে বিমল গুরুংয়ের গাঁটছড়া কতটা দীর্ঘস্থায়ী হয়।