হিন্দমোটরের জমি নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটল। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত একেবারেই বৈধ। এর ফলে উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্থান মোটরস-এর পুরনো কারখানার ৩৯৫ একর জমি নিয়ে আর কোনও আইনি জটিলতা রইল না (Supreme Court)। রাজ্যের এই পদক্ষেপে এখন মেট্রো ও বন্দে ভারতের কোচ তৈরির টিটাগড় ওয়াগনের প্রকল্পে দ্রুত কাজ এগোতে পারবে।
এই জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় ২০২২ সালে। বহু বছর ধরে হিন্দমোটরের সেই জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। শিল্প গড়ার জন্য অধিগৃহীত জমিতে কোনও প্রকল্প গড়ে না তোলায়, ওয়েস্ট বেঙ্গল এস্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যাক্টের ৬(৩) ধারা মোতাবেক রাজ্য সরকার জমিটি অধিগ্রহণ করে (Supreme Court)। কিন্তু তৎক্ষণাৎ হিন্দমোটরের তরফে আইনি লড়াই শুরু হয়। প্রথমে ল্যান্ড ট্রাইব্যুনাল, তারপর কলকাতা হাইকোর্ট—উভয় ক্ষেত্রেই রায় যায় রাজ্য সরকারের পক্ষে। এরপর গত মে মাসে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হিন্দমোটর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় (Supreme Court)।
শেষমেশ বুধবার সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির শুনানিতে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ও রাকেশ দ্বিবেদী। হিন্দমোটরের হয়ে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট শ্যাম দেওয়ান (Supreme Court)। বিচারপতি বিভি নাগারত্না এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কলকাতা হাইকোর্ট যে যুক্তিতে রায় দিয়েছে, তার বিরোধিতা করার মতো কোনও সংগত কারণ নেই। অর্থাৎ, রাজ্য সরকারের পদক্ষেপকে পুরোপুরি বৈধতা দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত (Supreme Court)।
এই রায়ের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভ হল টিটাগড় ওয়াগনের। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই জমির একাংশ লিজে দেওয়া হবে টিটাগড় ওয়াগনকে, যারা মেট্রো ও বন্দে ভারতের জন্য আধুনিক রেল কোচ তৈরির কারখানা গড়বে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই প্রকল্প এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।
উল্লেখ্য, হিন্দমোটরের এই জমিতেই একসময় তৈরি হত দেশের অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ি অ্যাম্বাসাডর। কিন্তু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি ফেলে রাখা ছিল। আর সেই জমিই এবার রূপ নেবে নতুন শিল্পাঞ্চলে।
আইকনিক অ্যাম্বাসাডরের স্মৃতি আজ জায়গা করে নিচ্ছে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-নির্ভর রেল কারখানায়। পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ভবিষ্যতের পথে আরও এক বড় পদক্ষেপ!