বাংলায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগ আবারও নতুন করে উঠে এল। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে বেআইনি অস্ত্রের সরবরাহ বাড়ছে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। এবার সরাসরি ঝাড়খণ্ডে অভিযান চালিয়ে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF)। এই অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS)।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার গান্ধীনগর এলাকায়। শুক্রবার ওই এলাকায় সুরজ সাউ নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ও তার মালিকানাধীন একটি ম্যারেজ হল ঘিরে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশের এসটিএফ (STF) এবং ঝাড়খণ্ড ATS। ম্যারেজ হলের সামনের একটি গুদাম থেকেই মেলে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ।
অভিযানে হাতেনাতে ধরা পড়ে দুই কারিগর, যাঁদের নাম কেশব কুমার ও প্রবীণ কুমার। তাঁরা বিহারের বাসিন্দা। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ নজরদারির পর এই কারখানায় হানা দিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয় (STF) । অভিযান চলাকালীন উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু অসম্পূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ এবং নগদ ১ লক্ষ টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, কারখানার মালিক পলাতক এবং তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।
সূত্রের খবর, এই অস্ত্র কারখানায় তৈরি হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র বাংলায় এনে বিক্রি করা হচ্ছিল। এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে (STF) । কারণ এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা সামনে এসেছে। কিছুদিন আগেই আসানসোল থেকে বিহারের মুঙ্গেরের এক অস্ত্র কারবারি ফিরদৌস আলমকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। তাঁর ব্যাগে পাওয়া গিয়েছিল বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র, যা বাংলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, বাংলার ভিতরে অস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় ভিন রাজ্য থেকে বারবার অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে। কে বা কারা এই অস্ত্র কিনছেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিশেষ করে নির্বাচনপূর্ব সময়ে এই ধরনের অস্ত্র সরবরাহের নেপথ্যে কী চক্রান্ত আছে, তা খুঁজে বের করতে বদ্ধপরিকর গোয়েন্দারা।
প্রসঙ্গত, গত তিন বছরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ঝাড়খণ্ড ও বিহারে যৌথভাবে মোট ১৮টি অভিযান চালিয়েছে। এই সাম্প্রতিক অভিযান সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। বেআইনি অস্ত্রের উৎস খুঁজতে এবং অস্ত্র চক্র ভাঙতে প্রশাসনের এই ধরনের আরও তৎপরতা এখন সময়ের দাবি।