বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা কেন অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত নম্বর পাবেন না—এই প্রশ্ন তুলেই আবারও কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন একদল প্রার্থী (SSC Scam)। এসএসসি নিয়োগ ব্যবস্থা নিয়ে আগেই উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য, এবার সেই বিতর্ক আরও ঘনীভূত হচ্ছে। মামলাটি গ্রহণ করেছে আদালত, এবং আগামী ২৮ নভেম্বর বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে (SSC Scam)।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি-র (SSC Scam) পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। আদালতের মতে, সেই নিয়োগ পদ্ধতিতে ছিল একাধিক অসাংবিধানিক ত্রুটি। সেই রায়ের ফলে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল—যোগ্য প্রার্থীদের নতুন পরীক্ষা নিয়ে পুনরায় নিয়োগ করতে হবে। রাজ্য সেই নির্দেশ মেনেই নতুন পরীক্ষা নেয় এবং ফলাফলও প্রকাশিত হয়।
সমস্যা দেখা দেয় ফলাফল প্রকাশের পর। দেখা যাচ্ছে, পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তাতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর যোগ করা হয়েছে (SSC Scam)। কিন্তু সেই নম্বর শুধুমাত্র সরকার পরিচালিত স্কুলে কর্মরত শিক্ষকদেরই দেওয়া হয়েছে। ফলে যাঁরা আগে সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন এবং সুপ্রিম রায়ের ফলে চাকরি হারিয়েছিলেন, তাঁরা এই ১০ নম্বরের সুবিধা পেয়েছেন। অথচ রাজ্য স্বীকৃত বেসরকারি স্কুলে যারা বছরের পর বছর শিক্ষকতা করেছেন, তাঁরা কোনও নম্বরই পাননি। এখানেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন—একই ধরনের অভিজ্ঞতা থাকলে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের মধ্যে এই ফারাক কেন?
এই অভিযোগই আদালতে তুলেছেন একাধিক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক ও প্রার্থী। তাঁদের দাবি, অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন যদি হয়, তবে সেটা সবার ক্ষেত্রেই সমানভাবে হওয়া উচিত। অভিজ্ঞতা শুধু সরকারি স্কুলে কাজ করলেই মূল্যবান হবে—এমন বৈষম্য সাংবিধানিকভাবে ঠিক নয় বলেই মত তাঁদের (SSC Scam)।
এদিকে নতুন পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কারণ অনেকেই লিখিত পরীক্ষায় পুরো নম্বর পেলেও ইন্টারভিউয়ের ডাক পাননি। যাঁদের অতিরিক্ত অভিজ্ঞতার নম্বর নেই, তাঁদের নম্বর কাট-অফ পয়েন্ট ছুঁতেই পারেনি। এর জেরে সোমবার রাতে বিকাশভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন কয়েকশো পরীক্ষার্থী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এসএসসি নিয়োগ নিয়ে আগেও একাধিক মামলা, আন্দোলন, অভিযোগে সরগরম ছিল রাজ্য। এবার বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা আদালতে যাওয়ায় আরও এক নতুন মোড় নিল এই বিতর্ক। এখন নজর ২৮ নভেম্বরের দিকে—হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন অধ্যায় শুরু হবে কি না।










