মঙ্গলবার দুপুরের হাওয়ায় হঠাৎ জমে গেল শোকের ঘন মেঘ (Rinku Majumdar’s Son Death)। নিউটাউনের এক বহুতলের দোতলার ঘরে বিছানার উপর থেকে উদ্ধার হল ২৫ বছর বয়সি সৃঞ্জয় দাশগুপ্তর নিথর দেহ (Rinku Majumdar’s Son Death)। পেশায় আইটি সংস্থার কর্মী, এই তরুণ বিজেপি নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম পক্ষের সন্তান (Rinku Majumdar’s Son Death)।
মাত্র ২৫ দিন আগে — ১৯ এপ্রিল — রিঙ্কুর জীবনে এসেছিল নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে। খুব ঘরোয়া, সরল অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতেই সম্পন্ন হয়েছিল বিয়ের পর্ব। কিন্তু সেদিন উপস্থিত ছিলেন না রিঙ্কুর একমাত্র ছেলে সৃঞ্জয়।
তখন বহু সংবাদমাধ্যমের তরফেও যোগাযোগ করা হয় সৃঞ্জয়ের সঙ্গে। আর সেই সময় তাঁর মুখে ফুটে উঠেছিল এক পরিণত, সহানুভূতিশীল সন্তানের মমত্ববোধ। টিভি নাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী সৃঞ্জয় বলেছিলেন,“জানি মায়ের বিয়ে হচ্ছে। আমার মতও আছে। এই দিনটার জন্য খুব খুশি। মায়ের জন্য খুব খুশি। মায়ের সিদ্ধান্তে আমি খুবই সাপোর্ট করে এসেছি। আগামীতেও করব।”
তাঁর কণ্ঠে ছিল অনন্ত বোঝাপড়া ও ভালোবাসার স্পষ্ট প্রতিধ্বনি। জীবনের বাস্তবতা বুঝে নিয়েছিলেন তিনি। তাই গলা কাঁপিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করি। ছুটি খুব একটা পাই না। গুড ফ্রাইডের ছুটিতে ছুটি কাটাতে আগে থেকেই প্ল্যান ছিল। আমি থাকলে ভালো হতো। মা খুব খুশি হতেন, উনিও (দিলীপ ঘোষ) খুশি হতেন। কিন্তু গোটা ব্যাপারটায় আমি সম্পূর্ণ পাশে ছিলাম।”
এমনকি বলেছিলেন, ইডেনে একসঙ্গে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা তিনজন — মা, ছেলে আর দিলীপ ঘোষ। এবং দিলীপ ঘোষকে তিনি “খুব ভালো লাগত” বলেও জানিয়েছিলেন।
কিন্তু সেই ভালোবাসা, সেই বোঝাপড়া, সেই সম্পর্ক আজ শুধুই স্মৃতি। মঙ্গলবার বারবেলায় নিউটাউনের এক ঘর থেকে উঠে এল তাঁর নিথর দেহ। পরিবারের কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না— এত মিষ্টি, সহানুভূতিশীল একটি ছেলে এমনভাবে চলে যেতে পারে!
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি আত্মহত্যা হলেও, মৃত্যুর আসল কারণ জানতে পাঠানো হয়েছে দেহ ময়নাতদন্তে।
তবে এই মৃত্যুর গভীর ক্ষত রয়ে গেল একজন মায়ের বুকের ভেতরে। একজন মা, যিনি হয়তো জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চেয়েছিলেন— কিন্তু এখন সেই শুরুতে এসে হারিয়ে ফেললেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় প্রিয় মানুষটিকে।