বিয়ের কিছুদিন পরেই স্ত্রীকে (Rinku Majumdar) সঙ্গে নিয়ে দিঘা সফরে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। উদ্দেশ্য ছিল জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে অংশ নেওয়া ও দর্শন করা। তবে সেই সফরের মধ্যেই ঘটে যায় এক রাজনৈতিক চমক— জগন্নাথ দর্শনের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন দিলীপ ঘোষ। আর এতেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয় জোরদার জলঘোলা (Rinku Majumdar)।
বিজেপির ভিতরেই এই সাক্ষাৎ নিয়ে দেখা দেয় চরম অসন্তোষ। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, দিলীপের এই সিদ্ধান্ত একেবারে ব্যক্তিগত, দল একে অনুমোদন করে না। প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়াতেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে বিরাগ। প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায় তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, দিলীপকে রাজ্য সভাপতি করা ছিল দলের এক বড় ভুল। এই সাক্ষাৎকে ঘিরে তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন দিলীপের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েই।
সেই সময় দিলীপ ঘোষ নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, তাঁর দিঘায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ আদতে দলের জন্যই ‘জয়’ এনে দিয়েছিল। তাঁর বক্তব্য ছিল, “যেখানে গেলে দলের লাভ হয়, সেখানে যেতেই হয়।”
এই বিতর্কের আবহে মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার (Rinku Majumdar)। আবেগভরা গলায় তিনি জানান, তাঁদের (Rinku Majumdar) পুত্রসন্তান আর বেঁচে নেই, কিন্তু ছেলে বেঁচে থাকতে বাবার ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিল। তিনি বলেন, “আমার ছেলে তো আজ আর নেই। কিন্তু ও বলে গিয়েছিল, বাবা কোনও ভুল করেননি। কারণ তৃণমূলের বহু হিন্দু ভোটার বাবার ওই সাক্ষাতের পর বিজেপির দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আজ প্রমাণিত, আমার ছেলের কথাই ঠিক ছিল। সত্যিই দিলীপবাবু কোনও ভুল করেননি।”
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ স্ত্রীকে (Rinku Majumdar) সঙ্গে নিয়ে দিল্লি বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি এবং ফের দিঘা-কাণ্ড ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
সব মিলিয়ে এক সময় রাজ্য বিজেপির শীর্ষপদে থাকা দিলীপ ঘোষকে ঘিরে আবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল, না কি এর পিছনে ছিল সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক কৌশল— তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ফের চাঙ্গা।