রানাঘাটের ১৬ মাসের ছোট্ট মেয়ে আস্মিকা দাস (Ashmika Das) আজ অনেক অসহায় অভিভাবকের কাছে এক নতুন আশার নাম। বিরল এবং কঠিন রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি টাইপ ১ (SMA Type 1)-এ আক্রান্ত আস্মিকার (Ashmika Das) জীবন বাঁচাতে দরকার ছিল বিশাল অঙ্কের টাকা—১৬ কোটি। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সঠিক সময়ে জিন থেরাপি না হলে, বাঁচার আশা প্রায় থাকেই না।
১১ মাস আগে মেয়ের এই রোগ ধরা পড়তেই, ভেঙে পড়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাঁরা। অসহায়ভাবে শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ক্রাউড ফান্ডিং। দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁদের ডাকে সাড়া দেন। সেই ভালোবাসা ও সহযোগিতার জোরেই বুধবার আস্মিকা (Ashmika Das) পেয়েছে জীবনদায়ী সেই জিন থেরাপি ইঞ্জেকশন।
এই মুহূর্ত শুধু আস্মিকার (Ashmika Das) বাবা-মায়ের চোখে জল আরও অনেক SMA-আক্রান্ত শিশুর পরিবার নতুন করে সাহস পাচ্ছে। সোনারপুরের হৃদিকা দাস নামের আরেক শিশুর মা বুধবার উপস্থিত ছিলেন অদ্রিকার চিকিৎসার সময়, তিনি কাতরভাবে আবেদন করেন, “প্লিজ পাশে দাঁড়ান। আমার মেয়েরও বাঁচার অধিকার আছে।”
আস্মিকার বাবা বলেন, “আমার মেয়ের যখন ৬ মাস বয়স, তখনই রোগটা ধরা পড়ে। একমাত্র ভরসা ছিল জনসাধারণের সাহায্য। সোশ্যাল মিডিয়ার সকলের কাছে আমরা সাহায্য চেয়েছিলাম। সংবাদমাধ্যম, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, সকলেই পাশে দাঁড়িয়েছেন। আজকের দিনটা তাঁদের দয়াতেই দেখা সম্ভব হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গরিব শিশুদের জন্য সরকারি সাহায্য অত্যন্ত দরকার।”
আস্মিকার চিকিৎসক ডাঃ সংযুক্তা দে জানান, “এই রোগে শিশুদের পেশী ও নার্ভ দুর্বল হতে থাকে। আগে ডায়াগনসিস হত না। এখন ধরা পড়ছে। কিন্তু ওষুধ ও থেরাপি এতটাই ব্যয়বহুল যে, সরকারি-বেসরকারি সহায়তা না পেলে সাধারণ মানুষের পক্ষে এই চিকিৎসা অসম্ভব। ভারতে ওষুধ তৈরি শুরু হলে এই ব্যয় অনেকটাই কমবে।”
অদ্রিকার এই সাফল্য নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে হৃদিকার পরিবারকেও। তাঁর মা জানান, “আমার মেয়েও টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা উঠেছে। কিন্তু এখনও দরকার ৯ কোটির মতো। মেয়ের বয়স এখন ১৪ মাস, হাতে মাত্র ৬-৭ মাস সময়। অদ্রিকার বাবাকে দেখে আমরাও সাহস পাচ্ছি।”