Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • ডান হাতে চার আঙুল ছিল না— প্রদীপ করের লেখার সত্যতা যাচাইয়ের দাবি বিজেপির
রাজ্য

ডান হাতে চার আঙুল ছিল না— প্রদীপ করের লেখার সত্যতা যাচাইয়ের দাবি বিজেপির

pradip kar nrc death
Email :3

রাজ্য রাজনীতিতে ফের নতুন বিস্ফোরণ। আগরপাড়ায় NRC আতঙ্কে আত্মহত্যা (NRC Death) ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। সোমবার দুপুরে বছর সাতান্নর প্রৌঢ় প্রদীপ করের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই বাড়ি থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রদীপবাবুর দেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার হয়েছে, যেখানে লেখা— “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।” সেই এক লাইনেই যেন শুরু হয়ে গেল নতুন রাজনৈতিক সংঘাত।

তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন এবং NRC নিয়ে রাজ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, এটি একেবারেই রাজনৈতিক অপপ্রচার (NRC Death)। তাদের বক্তব্য, প্রদীপ করের নাম বহু পুরনো ভোটার তালিকাতেই ছিল (NRC Death)। পানিহাটির বিজেপি নেতা চণ্ডীচরণ রায় বলেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকায় প্রদীপবাবুর নাম ছিল, সেটি আমরা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী যাচাই করেছি। তাঁর নাম বাদ যাওয়ার কোনও কারণ নেই। তৃণমূল সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এইভাবে NRC-র আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।”

চণ্ডীচরণ আরও বলেন, “আমি যতদূর জানি, প্রদীপবাবু কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন (NRC Death)। পরিবারের সঙ্গেও সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। তৃণমূল এখন সেই ব্যক্তিগত কষ্টকে রাজনৈতিক মোড়ক দিচ্ছে।” বিজেপি দাবি করেছে, আত্মহত্যার আগে উদ্ধার হওয়া নোটের লেখাও যাচাই করা প্রয়োজন, কারণ প্রদীপ করের ডান হাতের চারটি আঙুল ছিল না— দুর্ঘটনায় কাটা গিয়েছিল বহু বছর আগে। ফলে তাঁর পক্ষে ওইভাবে লেখা সম্ভব কি না, তা তদন্ত করা হোক।

প্রদীপবাবুর ভগ্নিপতি উত্তম হাজরা জানান, “২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রদীপ ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি ছিলেন বৈধ ভোটার। তাহলে NRC আতঙ্কের কারণ কীভাবে এল?” তিনি আদালতের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে একেবারেই উল্টো দাবি করা হচ্ছে। দলের রাজ্য সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “বিজেপি কি ওনার মনের ভিতর ঢুকে দেখেছে? মানুষ আতঙ্কে ভুগছে। বিজেপি আর নির্বাচন কমিশন মিলে ভয় দেখিয়ে মানুষের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকা বিজেপির হাতে কীভাবে এল? সাধারণ মানুষ কি জানেন, কীভাবে পুরনো লিস্ট বার করা যায়?”

এই ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “NRC-CAA নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় কেন্দ্রীয় সরকারের।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, “যে ভয় বিজেপি মানুষের মনে ঢুকিয়েছে, তার ফলেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে।” তিনি বুধবার দুপুরে স্বয়ং প্রদীপ করের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন।

অন্যদিকে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একেবারে অন্য দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “ওটা একেবারে ফলস কেস। প্রদীপ করের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল। ওনার পরিবার তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। NRC নিয়ে ওনার কোনও সমস্যা হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি নিজে ওনার ভোটার সিরিয়াল নম্বর দেখেছি।”

এখনও পর্যন্ত পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে— প্রদীপ কর দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সমস্যাও ছিল। যদিও আত্মহত্যার নোটে NRC-র উল্লেখ থাকায় তদন্তকারীরা কোনও দিকই অগ্রাহ্য করছেন না।

এই এক ঘটনার জেরে রাজ্য রাজনীতিতে ফের ছড়িয়েছে উত্তাপ। একদিকে তৃণমূল বলছে, বিজেপি ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করছে, অন্যদিকে বিজেপির দাবি— “তৃণমূল মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে।” আগরপাড়া থেকে শুরু হয়ে নাগরিকত্ব ইস্যুতে রাজ্যের রাজনীতি ফের জ্বলে উঠেছে নতুন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts