চিকিৎসা শিক্ষায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (NMC)। কর্নাটকের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে বেআইনিভাবে ১০ লক্ষ টাকার ঘুষের বিনিময়ে ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগে এক চিকিৎসক গ্রেফতার হওয়ার পরই তৎপর হয়েছে দেশের শীর্ষ মেডিক্যাল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (NMC)। কড়া ভাষায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে— নিয়ম না মানলে কেবল অনুমোদন বাতিলই নয়, আর্থিক জরিমানা থেকে শুরু করে আসন বৃদ্ধির আবেদনও খারিজ করা হবে।
ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক তপন কুমার জানা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান ও NMC-র মূল্যায়ণকারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। অভিযোগ, কর্নাটকের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজকে বেআইনিভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেন তিনি। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের পর এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় চিকিৎসা মহলে।
এই মামলার তদন্তে নেমে সিবিআই বর্ধমান, কলকাতা ও কর্নাটকে একযোগে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। সবমিলিয়ে স্পষ্ট, চিকিৎসা শিক্ষায় দুর্নীতির রমরমা এখন আর আড়ালে নেই। একদিকে পরিকাঠামোহীন মেডিক্যাল কলেজ mushroom-এর মতো গজিয়ে উঠছে, অন্যদিকে ঘুষ দিয়ে মিলে যাচ্ছে স্বীকৃতি। এনআরআই কোটায় দুর্নীতি, নিয়মবহির্ভূত আসন বরাদ্দ, সবমিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে— এই শিক্ষায় ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের ভবিষ্যৎ কতটা সুরক্ষিত?
এই পরিস্থিতিতেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের এই হুঁশিয়ারি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। কমিশন জানিয়েছে, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজকে নিয়ম মেনে চলতেই হবে। নচেৎ অনুমোদন বাতিলের পাশাপাশি মোটা অঙ্কের জরিমানা এবং নতুন আসন বৃদ্ধির কোনও আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
প্রশ্ন উঠছে— এবার কি সত্যিই ঘুষ, দালালি বন্ধ করে সৎ পথে ফিরবে চিকিৎসা শিক্ষা? না কি আরও মুখোশ খুলবে সামনে? NMC-র কড়া অবস্থান কি বদলাতে পারবে বহুলচর্চিত দুর্নীতির চিত্র?