বড় ধাক্কা তৃণমূল নেতা মুকুল রায়–এর (Mukul Roy)। দলত্যাগ বিরোধী আইনে দোষী প্রমাণিত হয়ে খারিজ হল তাঁর বিধায়ক পদ। দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলা মামলার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানাল, মুকুল রায় আর বিধায়ক নন (Mukul Roy)।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও শব্বর রসিদির বেঞ্চ এদিন রায় দেয়, ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়েও মুকুল রায় (Mukul Roy) পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে দলত্যাগ বিরোধী আইন ভেঙেছেন। সেই কারণেই তাঁর বিধায়ক পদ বাতিল করা হল। আদালত একইসঙ্গে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের সিদ্ধান্তও খারিজ করে দিয়েছে (Mukul Roy)।
এই মামলার সূচনা হয়েছিল ২০২২ সালে। বিজেপি নেতা ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় যৌথভাবে মুকুলের (Mukul Roy) বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বিজেপির হয়ে ভোটে জিতে আসার পর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় মুকুল দলত্যাগ বিরোধী আইন ভেঙেছেন।
প্রথমে স্পিকার ঘোষণা করেছিলেন, মুকুল রায় এখনও বিজেপির বিধায়ক। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে শুভেন্দু ও অম্বিকা মামলা করেন। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে গেলেও পরে কোর্টের পরামর্শে কলকাতা হাইকোর্টে ফের মামলা দায়ের হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার সেই মামলার নিষ্পত্তি।
বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চের রায় স্পষ্ট— “মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর পরবর্তী দলবদল আইনসঙ্গত নয়। বিধায়ক পদ আর বহাল রাখা যায় না।” আদালতের এই নির্দেশে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় একসময় বিজেপির অন্যতম সংগঠক ছিলেন। পরে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসে শাসকদলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এরপরই তাঁর বিধায়ক পদ ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। বৃহস্পতিবারের রায়ে সেই বিতর্কের অবসান ঘটলেও নতুন করে চাপ বেড়েছে শাসক শিবিরে।
বিজেপি শিবিরে উচ্ছ্বাস। শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “দলত্যাগ বিরোধী আইন মানা হচ্ছে, এই রায় সেই প্রমাণ দিল। আদালতের সিদ্ধান্তেই ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” অন্যদিকে, তৃণমূলের একাংশ বলছে, “মামলাটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাইকোর্টের এই রায় শুধু এক জন বিধায়কের ভাগ্য নির্ধারণ করেনি— বরং বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণেও এর বড় প্রভাব পড়তে পারে।











