মন্থার (Montha Cyclone) দাপটে নড়ে উঠেছে গোটা রাজ্য প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়লেও, তার প্রভাব এড়াতে পারছে না বাংলা। অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই নবান্নে খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম (Montha Cyclone)। মঙ্গলবার বিকেলেই মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্যের শীর্ষ কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব রাজেশ সিনহা, সেচ দফতরের সচিব মণীশ জৈনসহ একাধিক দফতরের সচিব। বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কীভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়েই হয় বিশদ আলোচনা (Montha Cyclone)।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে সতর্কতা (Montha Cyclone)। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রের ধারে থাকা গ্রামগুলিতে তৈরি রাখা হয়েছে ত্রাণশিবির ও উদ্ধার দল। পাশাপাশি বাঁধগুলির উপরে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। আগের অভিজ্ঞতা থেকেই এবার কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন।
এদিকে আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন বলছে, ঘূর্ণিঝড় মন্থা (Montha Cyclone) অন্ধ্রপ্রদেশে ল্যান্ডফল করলেও তার অবশিষ্ট অংশ ছত্তীসগঢ় হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে এগোচ্ছে। সেই কারণেই আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। এমনকি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণে ল্যান্ডফল হওয়া সত্ত্বেও ঘূর্ণিঝড়ের পথ পরিবর্তন করে উত্তর দিকের দিকে চলে যাওয়ায় এই বৃষ্টি অনিবার্য। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি চলতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা ও পুরুলিয়ায়।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রশাসনের নজর এখন মূলত উপকূল ও নদীবাঁধে। কোথাও জলস্তর বেড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেচ দফতর ও জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) এবং দমকল বাহিনীকে রাখা হয়েছে হাই অ্যালার্টে।
তবে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমতে শুরু করবে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত রাজ্যবাসীকে থাকতে হবে সতর্ক। কারণ মন্থা এখনও সম্পূর্ণ শক্তি হারায়নি।
মন্থার গতিবিধির উপর নজর রাখছে আলিপুর আবহাওয়া দফতরও। প্রতিমুহূর্তে নবান্নে পাঠানো হচ্ছে আপডেট। এক আধিকারিকের কথায়, “ঘূর্ণিঝড়ের গতি কিছুটা কমলেও এর বৃষ্টির প্রভাবই এখন বড় চিন্তা।”
অন্যদিকে, নবান্নে মুখ্যসচিবের কক্ষে চলছে লাগাতার মনিটরিং। প্রশাসনের এক কর্তার ভাষায়— “রাজ্যের যে কোনও জেলায় কোনও বিপর্যয় ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে খবর পৌঁছবে কন্ট্রোল রুমে। সব দিকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
মন্থা এখন রাজনীতির নয়, রাজ্যের— এমনটাই বলছেন সাধারণ মানুষ। কারণ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সামনে সবাই এক, লক্ষ্য শুধু একটাই— বৃষ্টি-ঝড়ের মধ্যেও বাংলা যেন থাকে নিরাপদ।








