এবার স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে সঙ্গে মিড-ডে মিলের (Mid Day Meal) অংশীদার হতে চলেছে পথ কুকুরেরাও। শনিবার রাজ্যের ‘সমগ্র শিক্ষা মিশন’ এমনই একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে, যা কার্যকর হবে সোমবার থেকেই। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, স্কুল চত্বরে বা আশেপাশে থাকা পথ কুকুরদের অন্তত দিনে একবেলা (Mid Day Meal) খাওয়াতে হবে মিড-ডে মিল থেকে। এই কাজে শিক্ষকদের উপরেই দায়িত্ব বর্তাবে বলে জানানো হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। পশুপ্রেমী ও সমাজকর্মীরা এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও, শিক্ষকদের একাংশ এই নির্দেশকে “অবাস্তব” ও “অযৌক্তিক” বলে বর্ণনা (Mid Day Meal) করছেন। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে বর্তমান মিড-ডে মিলের বরাদ্দেই কোনওক্রমে চালানো যাচ্ছে পড়ুয়াদের (Mid Day Meal) খাওয়ানো, সেখানে আরও একটি শ্রেণির জন্য খাবার কীভাবে সম্ভব? অনেক জায়গায় ছাত্র সংখ্যা দেখিয়ে অতিরিক্ত খরচ চালাতে হয়। শিক্ষক স্বল্পতার মাঝে এই বাড়তি দায়িত্ব কে নেবে?
এই প্রসঙ্গে WBPTA-র সভাপতি ভুজঙ্গ সরকার বলেন, “এতে আমাদের কাজের চাপ আরও বেড়ে গেল। এখন বুঝে উঠতে পারছি না, সরকার কুকুর খাওয়ানোর (Mid Day Meal) জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ করবে কি না!” অন্যদিকে, মালদার চর সুজাপুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল তালুকদার জানান, “আমাদের বড় স্কুলে মাঝেমধ্যে বেঁচে যাওয়া খাবার কুকুরকে দিতাম। সেটাই যদি নিয়ম হয়, আলাদা করে নির্দেশিকায় জানানো কতটা দরকার ছিল? শিক্ষকই যখন নেই, এই বাড়তি দায়িত্ব কে নেবে?”
অন্যদিকে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির বক্তব্য, এ এক মানবিক পদক্ষেপ। প্রাণীপ্রেমী স্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার মতে, এটা তো স্বাভাবিক দায়িত্ব। এটা হওয়ারই কথা ছিল। নির্দেশিকা না থাকলেও এরকম কাজ করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, এর আগে শিক্ষা মন্ত্রকের সুপারিশ অনুযায়ী ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস জানায়, স্কুলে শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে পথ কুকুরদের জননপ্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, টিকাকরণ, এবং তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। সেই সময়ও শিক্ষকদের বলা হয়েছিল, মিড-ডে মিল চলাকালীন কুকুর যেন বাচ্চাদের আশপাশে না ঘোরাফেরা করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে।
এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে কুকুরদের জন্যও খাবারের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল শিক্ষকদের হাতে। এই সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, রাজ্যের এই উদ্যোগে মানবতা ও সহাবস্থানের এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।