দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যজুড়ে বড়সড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি ঘোষণা করে তিনি জানিয়ে দিলেন, এ বছর রাজ্যের প্রতিটি পুজো কমিটি পাবে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে অনুদান। আগের বছর যেখানে এই অনুদানের অঙ্ক ছিল ৮৫ হাজার টাকা, সেখানে এবার এক ধাক্কায় ২৫ হাজার টাকা বাড়ানো হল। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিলবে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় (BJP)।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় উল্লসিত রাজ্যের হাজার হাজার পুজো উদ্যোক্তা, তবে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি (BJP)। বিজেপি-র (BJP) তরফে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “তিলোত্তমা কলকাতাকে খুন করেছে এই সরকারের লোকেরা। বাংলার মেয়েরা আজ নিরাপদ নয়, বেকার যুবক-যুবতীদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দেওয়া হয়েছে।”
শুভেন্দুর (BJP) আরও দাবি, পুজো কমিটিগুলিকে শর্তাধীনে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। তিনি আহ্বান জানান, “যাঁরা এই শর্তে রাজি নন, তাঁরা ব্যানার টাঙাবেন না। আর যাঁরা সরকারের অনুদান প্রত্যাখ্যান করবেন, তাঁদের পাশে আছি আমি। প্রয়োজনে আমার কাছে আসুন, আপনাদের সঙ্গে আমি আছি।”
একই ক্ষোভ ঝরে পড়ে বিজেপি নেতা (BJP) সজল ঘোষের মন্তব্যেও। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “সরকারি টাকায় মুখ্যমন্ত্রী যেন নিলাম করলেন। ৮৫ হাজার, ৯০ হাজার, ১ লাখ, তারপর ১ লক্ষ ১০! তিনবার হাতুড়ি ঠুকে বাংলার মেহনতি মানুষের মাথায় আঘাত করা হল। যাঁরা ডিএ-র জন্য রাস্তায় আন্দোলন করছেন, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, যাঁরা কাজের খোঁজে রাজ্য ছেড়ে চলে গিয়েছেন— তাদের জন্য কোনও সহানুভূতি নেই সরকারের। শুধু উৎসব আর ভোটই এই সরকারের লক্ষ্য।”
বামফ্রন্টও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সরকার বারবার বলে টাকা নেই। তাই রাস্তার কাজ হচ্ছে না, মানুষ মরছে। স্কুল-কলেজের হাল শোচনীয়। চাকরি নেই, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। অথচ মেলা, খেলা আর পুজো— এসব থেকে এক ইঞ্চিও সরবেন না মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তাঁর একটাই উদ্দেশ্য, ভোটব্যাঙ্ক শক্ত করা।”
রাজ্যজুড়ে যখন মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সংকট ও সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে চাপানউতোর, ঠিক তখনই পুজোর অনুদান নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হল। এখন দেখার, পুজোর এই ঘোষণার রাজনৈতিক প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।