ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্যে ফের একবার আইনি ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্ট মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের তৈরি নতুন ওবিসি তালিকার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আরও জটিলতা দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ খোলেন। তিনি জানান, এই তালিকা হাইকোর্টের আগের নির্দেশ মেনেই তৈরি করা হয়েছিল।
মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “এখনও চূড়ান্ত রায় আসেনি। আদালত একটা মত দিয়েছে, আমরা সেই অর্ডার হাতে পেয়েছি। আমাদের লিগাল টিম সেই নির্দেশ খতিয়ে দেখছে।” তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে তিন মাস সময় চেয়েছিল এবং সেইমতো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা ওবিসি তালিকার কাজ করেছে ওবিসি কর্পোরেশন এবং এই বোর্ডে একজন প্রাক্তন বিচারপতিও রয়েছেন।
হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই ২০১০ সালের পরে যাঁদের ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেই শংসাপত্র বাতিল ঘোষণা করেছে। এরপর রাজ্য সরকার নতুন তালিকা তৈরি করে। কিন্তু সেটাও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে। ফলে নতুন তালিকাও স্থগিত হয়েছে। এখন স্কুল-কলেজে ভর্তি কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে ওবিসি সংরক্ষণে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে অনেককে (Mamata Banerjee) ।
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বিরোধী দলগুলোর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, “সিপিএম আর বিজেপি কোনওদিনই চায়নি যাতে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সংরক্ষণ পাওয়া যায়। অথচ এই সংরক্ষণ ওদেরও সময়কালে চালু হয়েছিল।” মমতা প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে এখন কেন ৩৩ শতাংশ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে? চাকরি, শিক্ষা— সবই তো দিনদিন কমে যাচ্ছে, তার উপর আবার একটার পর একটা বাধা দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ভিপি সিং যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখনই ওবিসি সংরক্ষণের ভিত্তি তৈরি হয়, আর তখন বিজেপিও তাঁর পাশে ছিল। এখন সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে, এটা একেবারেই অন্যায়।”
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এখনও সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি, এবং রাজ্য সরকার এই বিষয়ে আইনি পথে লড়াই চালিয়ে যাবে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কারও শিক্ষা বা চাকরির সুযোগ যেন কেড়ে না নেওয়া হয়, সেটা সরকার নিশ্চিত করবে।