২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য-রাজনীতি। আর সেই আবহেই তীব্র বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপিকে একহাত নিলেন তিনি। অভিযোগ করলেন, বাঙালির উপর চক্রান্ত করছে বিজেপি। নির্বাচনের আগে “বাংলাদেশি” তকমা দিয়ে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ তুললেন তিনি (Mamata Banerjee)।
কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হওয়া প্রতিবাদ মিছিল শেষ হয় ডোরিনা ক্রসিংয়ে। সেই মঞ্চ থেকেই মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “বিজেপি বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিচ্ছে। এভাবে তারা বাংলার শ্রমিকদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে।” তাঁর (Mamata Banerjee) অভিযোগ, ঠিক এই একইভাবে বিহারেও ৩০.৫ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। “এটাই করে বিজেপি মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে জিতেছিল। এবার বিহারেও তাই করছে, তারপর টার্গেট বাংলা,” বলে কড়া হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, “ওরা বাইরে গিয়ে কাজ করেন, গরিব মানুষ, পরিশ্রম করে খায়। তাঁদের ‘বাংলাদেশি’, ‘রোহিঙ্গা’ বলে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাঁদের আধার, প্যান সব আছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই কি তাঁরা বাংলাদেশি হয়ে যান?” প্রশ্ন তুললেন মমতা।
তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত সরকার একটি গোপন নোটিফিকেশন জারি করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, যদি কাউকে সন্দেহ হয় যে সে বাংলা ভাষায় কথা বলে, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো যাবে।” কেন্দ্রের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “তাহলে কি বাংলা ভাষা ভারতের ভাষা নয়?”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা বিএসএফ, সিআরপিএফ এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ তুলে মমতা আরও বলেন, “যদি কেউ বাংলাদেশ থেকে বা অন্য দেশ থেকে ঢোকে, তাহলে সেই দায়িত্ব তো কেন্দ্রের, রাজ্যের নয়। বিমানে এলে তার দায়িত্বও তো কেন্দ্রীয় সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রকের।” তাঁর কটাক্ষ, “বর্ডার সামলাতে না পেরে আজ বাংলার গরিব শ্রমিকদেরই দোষারোপ করছে বিজেপি!”
এদিন ভাষণে ‘একটা বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’—এই প্রবাদ তুলে বিজেপিকে খোঁচা দেন মমতা। বলেন, “আমরা কিন্তু বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। বাংলার সম্মান, বাঙালির অস্তিত্বের লড়াই আমরা চালিয়ে যাবই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককেই অস্ত্র করে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে বড় বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী।