২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ফের বিস্ফোরক তোপ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। একদিকে বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে গর্জে উঠলেন, অন্যদিকে নাম না করে সরাসরি আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তার সঙ্গেই উঠে এল পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘নেতৃত্বে ভারত চালিত হচ্ছে’—এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।
বক্তব্যের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। অন্য কোনও ভাষাকে অসম্মান করি না। আমাদের রাজ্যে দেড় কোটির বেশি হিন্দিভাষী ভাইবোন থাকেন, কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে তো কোনও হিংসা নেই। তাহলে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে গিয়ে বাংলা বলার জন্য কেন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন?” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দরকারে আবার ভাষা আন্দোলন গড়ে তুলব। দেখতে চাই, কতটা সাহস আছে আপনাদের, কতগুলো জেল আছে আপনাদের হাতে!”
বাংলা ভাষা ও বাঙালি স্বভিমান রক্ষায় এই বার্তাই ছিল তাঁর মূল রাজনৈতিক অস্ত্র। তবে এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। সরাসরি না বললেও নাম স্পষ্ট করে মোদীকে কটাক্ষ করে বলেন, “বাংলায় কথা বললে অ্যারেস্ট করবেন আর টেলি-প্রম্পটার দেখে দুটো বাংলা শব্দ বলবেন? মনটা বড় করুন। নিজেরাই তো আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কন্ট্রোলে আছেন।”
এরপর তিনি (Mamata Banerjee) আরও জোরাল প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রকে উদ্দেশ্য করে, “পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে পারলেন না, অথচ এত রক্ত ঝরালেন? আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যখন কোমরে দড়ি বেঁধে পেছন থেকে টেনে পাঠিয়ে দেন, তখন চুপ করে থাকেন কেন? তখন তো কোনও প্রতিবাদ করেননি। আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখুন।”
এই প্রসঙ্গেই ইন্ডিয়া জোটের সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকেও স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি। কিছুদিন আগেই সংসদের বাদল অধিবেশনে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও তার পরবর্তী ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ ছিল, “আমরা কেন আমাদের দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির আপডেট মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে শুনব?”
সব মিলিয়ে ২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চ এবার রাজনৈতিক প্রতিবাদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নীতিকেও আঘাত করল। মমতার এই বক্তব্যে তীব্র রাজনৈতিক তোলপাড় তৈরি হতে চলেছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।