ভোটের আর মাত্র কিছু মাস বাকি। তার আগেই আজ ধর্মতলায় জমজমাট শহিদ সমাবেশে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক শহিদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সভা কার্যত রূপ নেয় দিল্লির সরকার পতনের আহ্বানে। সমাবেশ থেকে সরাসরি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। জানান, বাংলার অস্মিতা ও ভাষার ওপর আঘাত সহ্য করা হবে না এবং ২০২৬ সালের পর দিল্লির চিত্রও বদলে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) স্পষ্ট বার্তা, “আমি যার পেছনে পড়ি, ছাড়ি না।” তিনি নন্দীগ্রামের উদাহরণ টেনে বলেন, “আমার বই পড়ুন, জানতে পারবেন আমি কেমন লড়াই করি। আজ শহিদদের রক্তে তর্পণ করে বলছি — তোমাদের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই থামবে না।” তাঁর হুঁশিয়ারি, যদি বাঙালির ওপর অত্যাচার হয়, তবে সেই প্রতিবাদ পৌঁছাবে দিল্লি অবধি।
অন্যদিকে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, এবার থেকে তিনি সংসদে নিয়মিত বাংলা ভাষায় কথা বলবেন। তাঁর ভাষায়, “দেখি কার কত জ্বালা হয়। গলা কেটে নিলেও বাংলা বলব।” একযোগে বাংলা ভাষা ও বাঙালি পরিচয়ের প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন দুই শীর্ষ নেতা।
তৃণমূল কংগ্রেসের (Mamata Banerjee) অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষী মানুষদের হেনস্থা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে এসে বলেছিলেন, “বাঙালির অস্মিতা সুরক্ষিত বিজেপির হাতেই।” এই বক্তব্যকেই আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করা মানে গোটা বাঙালি জাতিকে অবমাননা করা, আর তার কড়া জবাব দেওয়া হবে।
এই সভা থেকে তৃণমূল কার্যত কেন্দ্রবিরোধী নির্বাচনী প্রচারের ঢাক বাজিয়ে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শহিদ দিবসের আবেগ, বাঙালি চেতনা ও রাজ্য-জুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ— সব মিলিয়ে এদিনের সভা হয়ে উঠল আগাম নির্বাচনের লড়াইয়ের প্রথম ঘন্টাধ্বনি।