শহরের বুকেই ছক কষছিল ভয়ঙ্কর এটিএম এবং অনলাইন প্রতারণার চক্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ (Kolkata Police) গ্রেফতার করে এই চক্রের মূল পান্ডাদের। প্রথমে চারজনকে ধরা হয়, পরে তাঁদের জেরা করে গ্রেফতার হয় আরও তিনজন—যাঁরা ওড়িশার বাসিন্দা। তাদের হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক এটিএম কার্ড, আধার কার্ড এবং মোবাইল ফোন (Kolkata Police)।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্র একটি জালিয়াতির ভয়ঙ্কর ছক কষেছিল (Kolkata Police)। সাধারণ মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা কাজে লাগিয়ে ভাড়া নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করে, পরে সেই অ্যাকাউন্টের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে সেই টাকা তুলে নেওয়া হত। এই কাজেই ব্যবহৃত হত বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নকল বা সংগ্রহ করা এটিএম কার্ড ও আধার কার্ড।
ঘটনার সূত্রপাত, মঙ্গলবার গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ সুয়োমোটো একটি মামলা দায়ের করার পর (Kolkata Police)। সার্জেন্ট পালডেন ভুটিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ একটি সন্দেহজনক গাড়িকে চিহ্নিত করে তারাতলা রোডে। গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে চার যুবকের কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। গাড়ির ভিতর পাওয়া যায় একটি ব্যাকপ্যাক, যাতে ছিল একাধিক এটিএম কার্ড ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (Kolkata Police)।
ধৃত চার যুবক—সাহিনুর রহমান ফকির, শেখ রাহুল, শেখ আসফাক ও আশিক মিস্ত্রি—রবীন্দ্রনগর থানার অন্তর্গত সন্তোষপুর এলাকার বাসিন্দা। এদের জেরা করতে গিয়ে উঠে আসে আরও তিনজনের নাম। এরপর পুলিশ হানা দেয় হাওড়ার শিবপুরে একটি মলের সামনে এবং সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় এস কে শহীদ কাদরি, এস কে আলিমুদ্দিন এবং এস কে ফিরোজকে। এই তিনজনের বাড়ি ওড়িশার ভদ্রক জেলায়। তারা হাওড়ার গোলাবাড়ির একটি হোটেলে উঠেছিল বলে জানতে পারে পুলিশ।
ওই হোটেল রুমে তল্লাশি চালিয়ে আরও একাধিক এটিএম কার্ড, আধার কার্ড এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, শহরের মধ্যে বসেই এই প্রতারক দল একটি বড়সড় পরিকল্পনা করে চলছিল।
এখন প্রশ্ন উঠছে—ওড়িশার ওই যুবকেরা কেন হাওড়ার হোটেলে ঘাঁটি গেড়েছিল? তারা কি এখানেই কোনও বড় প্রতারণার ছক করছিল? রবীন্দ্রনগরের চার যুবকের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র কীভাবে গড়ে উঠল? এদের পিছনে কি আরও কেউ রয়েছে?
পুলিশ এই পুরো চক্রের ছক খোলাসা করতে জোরদার জেরা চালাচ্ছে। তদন্তকারীদের ধারণা, এটি কোনও স্থানীয় চক্র নয়, বরং এর যোগসূত্র ছড়িয়ে রয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। বহু সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যেই এই চক্রের ফাঁদে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।