কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে (Kasba Case) তদন্তে এসে কার্যত বাধার মুখে পড়লেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি অর্চনা মজুমদার এবং তাঁর দুই সহযোগী। রবিবার দক্ষিণ কলকাতার বিতর্কিত ল কলেজে (Kasba Case) পৌঁছনোর পর অকুস্থলে ঢুকতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন তাঁরা। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, ঘটনাস্থলের কোনও ছবি বা ভিডিও তোলা যাবে না। এর বিরুদ্ধেই কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানান মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি।
অভিযোগ, ধর্ষণের ঘটনার মূল স্থল অর্থাৎ ল কলেজের ‘ইউনিয়ন রুম’ বা গার্ডরুম (Kasba Case) যেখানে ঘটনাটি ঘটেছিল, তা আগে থেকেই সিল করা ছিল পুলিশের তরফে। সেই জায়গাতেই পৌঁছাতে চান অর্চনারা। তাঁদের যুক্তি, ঘটনার বাস্তব চিত্র পর্যবেক্ষণ করা ও প্রমাণ সংগ্রহ করা জাতীয় মহিলা কমিশনের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয়, তদন্তের স্বার্থে এবং সিল করা স্থান রক্ষা করতেই প্রবেশাধিকার দেওয়া যাবে না (Kasba Case) ।
এই অবস্থায় শুরু হয় বিতণ্ডা। একাধিকবার পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন অর্চনা মজুমদার। কসবা থানায় গিয়ে অফিসার ইন চার্জ-এর সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। এদিন সাংবাদিকদের সামনে ক্ষুব্ধ অর্চনা বলেন, “আপনারা গুগল করুন, দেখবেন জাতীয় মহিলা কমিশনের কতটা ক্ষমতা রয়েছে, কোথায়-কোথায় আমরা যেতে পারি।”
পুলিশের সঙ্গে অনেক বাদানুবাদের পর অবশেষে কমিশনের প্রতিনিধিদের ঘটনার স্থান পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে বেশ কিছু শর্তসাপেক্ষে। তাঁদের বলা হয়, দূর থেকে জায়গা দেখা যাবে, কিন্তু সিল করা গার্ডরুমের ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে সীমিত সময়ের জন্য ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা, যদিও তাতে তদন্তের পরিপূর্ণ সুবিধা মেলেনি বলেই মনে করছেন কমিশনের প্রতিনিধি।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার দক্ষিণ কলকাতার এই নামী ল কলেজে এক ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার দাবি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক দাপুটে নেতা কলেজের ইউনিয়ন রুমে তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেন। ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে। ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবেই তদন্তে নামে জাতীয় মহিলা কমিশন।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের বাধা এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিবাদ ঘিরে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে কসবা গণধর্ষণকাণ্ড। প্রশ্ন উঠছে— রাজ্য প্রশাসন কী আদৌ কমিশনের সংবিধানগত অধিকারকে সম্মান জানাচ্ছে? নাকি তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে কোনওভাবে? এখন দেখার, এই ঘটনার পর কমিশনের তরফে কী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।