কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণ মামলার (Kasba Case) মূল অভিযুক্তের অতীত ঘেঁটে উঠে এল একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। শুধু বর্তমানে নয়, কলেজে পড়াকালীন সময়েও তার দাদাগিরি, গুণ্ডামি, হুমকি আর বেআইনি কার্যকলাপে অতিষ্ঠ ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রী সবাই। এমনকি প্রিন্সিপাল পর্যন্ত রেহাই পাননি তাঁর উচ্ছৃঙ্খল আচরণ থেকে (Kasba Case)।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যখন কলেজের ছাত্র ছিল, তখন একাধিকবার তৎকালীন প্রিন্সিপাল দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়কে ঘেরাও করে রাতভর আটকে রাখা হয়েছিল (Kasba Case)। নানা অজুহাতে তাঁকে হেনস্থা করা হতো। এমনকি বেআইনি ভর্তির জন্যও চাপ দেওয়া হত অভিযুক্তের তরফে। তাঁর স্ত্রী নবনীতা চট্টোপাধ্যায় জানান, “ছাত্র থাকাকালীনই সে অসামাজিক কাজকর্মে যুক্ত ছিল। প্রিন্সিপালকে হেনস্থা করত। একাধিকবার পুলিশি ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল। একই সময়ে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছিল, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। রেজিস্টারকেও জানানো হয়েছিল।”
এই পরিস্থিতিতে গভার্নিং বডির অনুমতি নিয়ে অভিযুক্তের কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেন তৎকালীন প্রিন্সিপাল (Kasba Case)। ২০১৮ সালে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয় চার বছরের জন্য। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, শুধুমাত্র পরীক্ষার সময় কলেজে আসতে পারবে সে।
কিন্তু ২০২২ সালে বহিষ্কার ওঠার পর, ২০২৩ সাল থেকে ফের ‘কলেজের দাদা’ হয়ে ওঠে অভিযুক্ত v। কলেজে ফেরার পর থেকেই একের পর এক অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি, ছাত্রদের মারধর, বেআইনি অর্থ দাবি—সব মিলিয়ে ফের তৈরি হয় সন্ত্রাসের পরিবেশ।

নবনীতা চট্টোপাধ্যায় জানান, “আমার স্বামী থাকাকালীন ওর গতিবিধি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছিল পুলিশি ও আইনি পদক্ষেপে। কিন্তু যদি সেই সময় আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হত, তাহলে আজ এমন নক্কারজনক ঘটনায় জড়িত হতে পারত না।”
এখন প্রশ্ন উঠছে—কেন এবং কীভাবে আবার কলেজে দোর্দণ্ডপ্রতাপ হয়ে উঠল এই অভিযুক্ত? কার মদতে, কার প্রশ্রয়ে? কে তাকে ফের ‘ছাত্রনেতা’র তকমা দিল?
এই ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, রাজনৈতিক ছত্রছায়া এবং দীর্ঘদিনের অবহেলা একসঙ্গে সামনে এসে গেছে। এবং এই তথ্য সামনে আসার পর, কলেজের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল ক্ষোভ এবং উদ্বেগ।
এই প্রশ্ন এখন চারদিকে—একবার বহিষ্কৃত হওয়া এক অভিযুক্ত ফের কীভাবে কলেজের নিয়ন্ত্রণে আসতে পারল? কারা তাকে প্রশ্রয় দিল? উত্তর না মিললে, শুধু কলেজ নয়, প্রশ্নের মুখে পড়বে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই।