একসময় একটি প্রতিবাদী শর্ট ফিল্ম বানিয়ে দলীয় ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী ও যুবনেত্রী রাজন্যা হালদারকে। তাঁদের সাসপেন্ডও হতে হয়েছিল। এরপর একপ্রকার অন্তরালে চলে যান এই প্রতিবাদী যুগল। কিন্তু কসবা কাণ্ড (Kasba Case) ফের তাদের প্রতিবাদের আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে।
রাজ্যজুড়ে যখন কসবা ল কলেজে ছাত্রী গণধর্ষণের (Kasba Case) ঘটনায় উত্তাল পরিস্থিতি, ঠিক তখনই ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়ে উঠলেন রাজন্যা ও প্রান্তিক। ফেসবুক লাইভে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে তাঁরা তুলে ধরলেন তাঁদের ক্ষোভ ও বক্তব্য।
লাইভের শুরুতেই রাজন্যা (Kasba Case) বললেন, “আজ আমরা রাজনীতিক হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে কথা বলব।” এরপরই দুইজনেই জানান, এই ঘটনার বিচার হোক রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে। প্রান্তিক বলেন, “এই ঘটনায় (Kasba Case) যারা যুক্ত, তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়। রাজনীতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে বিচার হোক। যে দোষী, সে দোষী।”
রাজন্যা সাফ বলেন, “এই ঘটনার (Kasba Case) পর আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ভাববে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আর নিরাপত্তা নেই। গাছের বীজ থেকেই যদি বোঝা যায় তা নষ্ট, তবে আগেভাগেই সাবধান করা উচিত ছিল। তাহলে হয়তো এই দিন দেখতে হত না।”
এই ফেসবুক লাইভে রাজন্যা একদম স্পষ্ট ভাষায় লেখেন ক্যাপশনে— ‘ধর্ষককে নিয়ে তর্জা নয়, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করুন। অন্য রাজ্যের রেফারেন্স নয়, অপরাজিতা বিল কার্যকর করুন।’
অভিযোগের তীর রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই এক দাপুটে নেতার দিকে, যিনি মূল অভিযুক্ত। এই প্রেক্ষিতে রাজন্যা ও প্রান্তিক জানান, “এই ঘটনা তৃণমূলের কেউ করেছে কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। অপরাধী যদি দলেরই কেউ হয়, তবু যেন শাস্তি হয়। রাজনৈতিক লড়াইয়ে এই বিষয়টিকে ব্যবহার করাও সমর্থনযোগ্য নয়।”
তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট— অপরাধের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারই একমাত্র লক্ষ্য। অপরাধীকে রাজনৈতিক রং দিয়ে আড়াল করা চলবে না, আবার বিরোধীদের মতো করে এটিকে কেবল রাজনৈতিক ইস্যু করাও অনুচিত।
একসময় যারা দলের অন্দরে অবস্থান নিয়েও প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন, তারা ফের যখন সোচ্চার হয়ে পথে নামছেন, তখন দলীয় অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এখন দেখার, রাজন্যা-প্রান্তিকদের এই বার্তা দল কিভাবে গ্রহণ করে— সমর্থন, নাকি ফের একবার শাস্তির মুখে পড়তে হয় প্রতিবাদী কণ্ঠকে?