কসবায় ল’ কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রতিদিনই সামনে আসছে নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য (Kasba Case)। মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতার, যার বিরুদ্ধে একাধিক শ্লীলতাহানি ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ আগে থেকেই রয়েছে। এবার পুলিশি জেরায় উঠে এল আরও ভয়াবহ তথ্য (Kasba Case)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রনেতার দুই ঘনিষ্ঠ সঙ্গী, যারা ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে, তারা স্বীকার করেছে যে পুরো ঘটনা ঘটেছিল (Kasba Case) সেই ‘দাদা’র নির্দেশেই। জেরায় তারা জানিয়েছে, অভিযুক্ত নেতা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল—ছাত্রীকে গার্ডরুমে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের সময় সবকিছু ভিডিও করতে (Kasba Case) । উদ্দেশ্য ছিল, সেই ভিডিওকে অস্ত্র করে পরে ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করা এবং আবারও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করা।
তদন্তকারীদের দাবি, এত বড় একটি অপরাধ নির্লজ্জ এবং সুপরিকল্পিতভাবে ঘটেছে কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরেই v। ছাত্রনেতার নির্দেশে ধর্ষণ, ভিডিও রেকর্ডিং এবং পরবর্তী ব্ল্যাকমেলের ছক—এই ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে কাঁপছে তদন্তকারী মহল।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের তরফে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং সম্ভাব্য আরও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে প্রবল চাপানউতোর। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে একসঙ্গে তিনটি জনস্বার্থ মামলা। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টেও বিষয়টি গড়িয়েছে। বিজেপি তৈরি করেছে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি, যাদের রিপোর্ট সরাসরি যাবে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি. নাড্ডার কাছে।
এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রনেতাকে ঘিরে প্রশ্ন বেড়েই চলেছে। কলেজের অস্থায়ী কর্মী হয়েও তার ছিল ছাত্ররাজনীতির ‘দাদাগিরি’। ছাত্রছাত্রীদের কাছে সে ছিল ‘দাদা’ নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে, এমনকি কলকাতার একাধিক থানায় শ্লীলতাহানি এবং হেনস্থার মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রশ্ন উঠছে—যার অতীত এত কলঙ্কিত, তাকে এতদিন ধরে কলেজে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছিল কেন? কলেজ প্রশাসন কি অজান্তে ছিল, নাকি চুপচাপ সব জানত? ছাত্রছাত্রীরা যেমন আতঙ্কে, তেমনই সাধারণ মানুষও এই ঘটনায় স্তম্ভিত।
এই ঘটনা শুধু একটি গণধর্ষণের মামলা নয়—এ এক ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক ক্ষমতা, প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং নৈতিক অধঃপতনের নগ্ন ছবি। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে উত্তাল প্রতিক্রিয়া। এখন অপেক্ষা—এই ঘটনার সত্যিই বিচার হবে, নাকি আবারও আড়ালেই থেকে যাবে ‘দাদা’র দাদাগিরি?