পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত সমাজসেবী সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের (Kartik Maharaj) বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলার অভিযোগ, ২০১৩ সালে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছিলেন কার্তিক মহারাজ (Kartik Maharaj)। অভিযুক্ত সন্ন্যাসী ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে যুক্ত এবং তাঁর সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও রয়েছে বলে পরিচিত।
অভিযোগকারী মহিলার দাবি, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে এক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে মুর্শিদাবাদের একটি আশ্রমে নিয়ে যান মহারাজ (Kartik Maharaj)। আশ্রমেই তাঁর থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু সেখানেই এক রাতে ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন মহারাজ। অভিযোগ, পরবর্তী ছয় মাসে অন্তত ১২ বার তাঁকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
ভয় এবং সমাজিক লাঞ্ছনার আশঙ্কায় এতদিন চুপ ছিলেন ওই মহিলা। তাঁর দাবি, তিনি প্রতিবাদ করতে গেলে মহারাজ (Kartik Maharaj) আত্মহত্যার হুমকি দেন। ফলে নিরুপায় হয়েই এতদিন চুপ করে ছিলেন। তবে সম্প্রতি সাহস করে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
অন্যদিকে কার্তিক মহারাজ (Kartik Maharaj) সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি একজন সন্ন্যাসী। জীবনে এমন বাধা আসতেই পারে। আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে—তা অস্বীকার করছি না, তবে এমন কোনো কাজ আমি করিনি।” তাঁর আইনজীবীরা আইনি পথে বিষয়টির মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কার্তিক মহারাজকে (Kartik Maharaj) ২০২৫ সালে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী’ প্রদান করা হয়। তবে শুধু ধর্মীয় এবং সমাজসেবার ক্ষেত্রেই নয়, রাজনৈতিক যোগাযোগের কারণেও তিনি সংবাদমাধ্যমের নজরে ছিলেন বহুবার। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রকাশ্যে বিজেপিকে ভোটে সাহায্য করার অভিযোগে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। সেই সময় মহারাজ মমতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেন এবং একটি আইনি নোটিশ পাঠান।
এই অভিযোগ এমন এক সময় সামনে এল, যখন কলকাতা শহর উত্তাল হয়ে উঠেছে আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার পর। তাই একের পর এক লজ্জাজনক অভিযোগে বেসামাল হয়ে পড়ছে রাজ্য সরকার ও প্রশাসন।