শিক্ষকদের (Teachers Protest) প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘হুলিগান’ শব্দ প্রয়োগ করে কার্যত বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের (Teachers Protest) একহাত নিলেন তিনি। তাঁর (Teachers Protest) ভাষায়, “যেখানে হুলিগান বলার, সেখানে হুলিগান বলতে হবে। ১৫ মে যা হয়েছে, তাকে আপনি কী বলবেন? সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, ওগুলোকে কি আমি ফুল দিয়ে বরণ করব?”
এই মন্তব্য ঘিরে শিক্ষক মহল থেকে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত বয়ে চলেছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—একজন সাংসদ কীভাবে সেই পেশার মানুষদেরই এতটা অবমাননাকর ভাষায় আক্রমণ করতে পারেন, যাঁরা দেশের ভবিষ্যৎ তৈরি করেন?
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এই ইস্যুতে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “এই শিক্ষকরাই কোনও একদিন এদের পড়িয়েছেন। সেই শিক্ষকদের যদি কেউ হুলিগান বলেন, তাহলে বলার কিছু নেই। আসলে কল্যাণবাবু তৃণমূলের ভেতরের কিছু চাটুকার শিক্ষক দেখে গোটা শিক্ষক সমাজকে একই চোখে দেখছেন।”
সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ঝড় তুলেছে এই মন্তব্য। বহু শিক্ষাবিদ, প্রাক্তন অধ্যাপক, এমনকি শাসকদলেরই কিছু ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী প্রকাশ্যে কল্যাণের এই মন্তব্যকে ‘ক্ষমতাসীন ঔদ্ধত্যের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ’ বলেও অভিহিত করেছেন।
শিক্ষকদের দাবি, ১৫ মে-র প্রতিবাদ ছিল রাজ্য সরকারের নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায্য রাগের বহিঃপ্রকাশ। অথচ সেই আন্দোলনকারীদের ‘হুলিগান’ বলে অপমান করে মূল ইস্যুকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী।
প্রাক্তন উপাচার্যদের একাংশ জানাচ্ছেন, “এমন একজন সাংসদ, যিনি শিক্ষক সমাজকে সম্মান জানানোর বদলে তাঁদের ‘হুলিগান’ বলেন, তাঁর আসনে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।” অনেকে এও বলছেন, কল্যাণবাবুর এই মন্তব্যই বোঝাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কী ভয়াবহ দিকেই না এগোচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে আরও—সাংসদ কি আদৌ শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উপযুক্ত? নাকি তাঁর মুখ দিয়ে বেরোনো শব্দগুলোতেই স্পষ্ট ক্ষমতার ঔদ্ধত্য আর শিক্ষাবিরোধী মানসিকতা?
শেষ কথা, ‘হুলিগান’ শব্দটা কি শুধুই কিছু বিক্ষোভকারীর প্রতি নয়, গোটা শিক্ষকসমাজের প্রতি এক গোপন ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ? সমাজ এখন সেই উত্তর খুঁজছে।