বাংলার রাজনীতিতে ফের তীব্র সংঘাত। একদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অন্যদিকে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। শনিবার সন্ধ্যায় হুগলির শেওড়াফুলি লোনাডাঙায় এক জগদ্ধাত্রী পূজা উদ্বোধনে এসে শুভেন্দুকে ঘিরে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কল্যাণ। তাঁর (Kalyan Banerjee) কথায়, “আর পাঁচ-সাতদিন সময় দিন। তারপরই আমি জানিয়ে দেব শুভেন্দু কাকে কাকে চাকরি দিয়েছে। যত টাকা তুলেছে, সব বেরিয়ে আসবে।”
কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে থাকা একাধিক এফআইআরের রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করেছে। ঠিক সেই ঘটনার পরেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) এই মন্তব্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তিনি বলেন, “প্রায় সাতাশ-আটাশটা FIR স্থগিত ছিল। কোনও তদন্ত এগোয়নি। রাখাল মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি শুভেন্দুর খাস লোক। ও চাকরির নাম করে টাকা তুলেছিল। কোথাও বলেছিল রেলে চাকরি দেবে, কোথাও বলেছিল কলকাতা পুলিশে দেবে। সেই FIR স্থগিত ছিল। এখন হাইকোর্ট বলেছে, তদন্ত চলবে।”
কল্যাণ (Kalyan Banerjee) আরও বলেন, “এই রাখাল মুখোপাধ্যায় কার হয়ে টাকা তুলত, সবাই জানে। তিনটে এফআইআরে হাইকোর্ট বলেছে, পুলিশ পুলিশের মতো তদন্ত করবে। শুভেন্দুর দলের ছেলেরা মেদিনীপুরের জেলে ঢুকবে।”
সাংসদ এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি (Kalyan Banerjee) বলেন, “এসসি-ওবিসি কেসে বীরবাহা হাঁসদা ও তাঁর দাদা যে FIR করেছিলেন, সেটিও আগে স্থগিত ছিল। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেছেন, যেহেতু এই এফআইআর চ্যালেঞ্জ করা হয়নি, তাই তদন্ত চলবে। পাঁচ সাতদিন সময় দিন… মেদিনীপুরে অযোগ্য শিক্ষকদের লিস্ট যেমন বেরিয়েছিল, তেমনই শুভেন্দু যাঁদের চাকরি দিয়েছিল সেই লিস্টও আমি প্রকাশ করব।”
তাঁর দাবি, “শুভেন্দু অধিকারী হলেন বাংলার সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ। যত লুকোনোর চেষ্টা করুক, সব এক এক করে ফাঁস হয়ে যাবে।”
এই মন্তব্যের পর বিজেপি শিবিরে চাঞ্চল্য। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার পাল্টা বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কে শুভেন্দুকে দয়া করেছেন বুঝতে পারছি না। উনি যখন তখন যা খুশি বলেন, তার কোনও গুরুত্ব নেই। আমি যা বলার সবটাই ওঁর বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে বলে এসেছি—ওটা হজম করতে ওঁদের এক বছর লাগবে।”
হাইকোর্টের নির্দেশ, কল্যাণের বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি এবং বিজেপির পাল্টা আক্রমণ— তিনেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কল্যাণের এই প্রকাশ্য মন্তব্য শুধু আইনি নয়, রাজনৈতিক যুদ্ধেরও নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে।













