২১ জুলাই (21 July)—রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসমাবেশ। লাখ লাখ কর্মী-সমর্থকের ঢল নেমেছে কলকাতার ধর্মতলায়। নানা রকমের সাজসজ্জায় অংশ নিচ্ছেন বহু মানুষ। কিন্তু এবারের সমাবেশে নজর কাড়লেন এক বিশেষ তরুণী—খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রূপে (21 July)!
নীল পাড় সাদা শাড়ি, পায়ে হাওয়াই চটি, চোখে কালো ফ্রেমের চশমা—একনজরে দেখে যেকোনও মানুষ চমকে উঠবেন! এমন কী, কেউ কেউ ধৃষ্টতা বলেও ভাবতে পারেন (21 July)। কিন্তু সেই সাজের আড়ালে ছিল এক হৃদয়বিদারক বাস্তবতা, এক অনবদ্য সামাজিক বার্তা।
তরুণীর হাতে ধরা একটি কলস, তাতে লেখা—‘জীবন ভাণ্ডার’। উদ্দেশ্য একটাই—এক অসুস্থ শিশুর প্রাণ বাঁচানো (21 July)। রানাঘাটের অস্মিকার নাম রাজ্যের অনেকেই শুনেছেন। দুরারোগ্য স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়েছিল সে। জীবনদায়ী ইঞ্জেকশনের দাম ছিল ১৬ কোটি টাকা। সেই একই রোগে আক্রান্ত এবার সোনারপুরের ছোট্ট হৃদিকা।
মাত্র ৯ মাসের হৃদিকা জন্মের পর প্রথম কিছু মাস ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু কিছুদিন পর দেখা যায়, সে ঘাড় শক্ত করতে পারছে না, হামাগুড়িও দিতে পারছে না। চিকিৎসকেরা জানান, হৃদিকা আক্রান্ত ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি টাইপ-১’ রোগে। সেই রোগ সারাতে প্রয়োজন ১৬ কোটি টাকার একটি বিশেষ ইঞ্জেকশন।
হৃদিকার মা হৈমন্তী একজন গৃহবধূ, আর বাবা বাপন দাস নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক। এই বিপুল পরিমাণ টাকা তাঁদের পক্ষে সংগ্রহ করা অসম্ভব। তাই শুরু হয়েছে ‘ক্রাউডফান্ডিং’—মানুষের সাহায্যে টাকা জোগাড় করার মরিয়া চেষ্টা।
তরুণী (21 July) বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিকতা ও নীতিতে অনুপ্রাণিত হয়েই এই ভাণ্ডারকে নাম দিয়েছি ‘জীবন ভাণ্ডার’। আজকের সভায় লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছেন। প্রত্যেকেই যদি ২-৫ টাকা করে দেন, তাহলে হৃদিকার চিকিৎসার জন্য একটা বড় রকমের সাহায্য মিলবে।”
তাঁর সঙ্গে থাকা আরেকজন জানান, “প্রয়োজন ৯ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত এক কোটি টাকা জোগাড় হয়েছে। বাকি টাকা জোগাড় না হলে বাঁচবে না হৃদিকা। তাই আমরা শেষ আশায় মমতার সভার (21 July) ভিড়ে এসেছি। ভরসা দিদি।”
একুশে জুলাইয়ের মতো আবেগঘন দিনে যখন ধর্মতলার রাজপথে রাজনৈতিক শ্লোগান, বক্তৃতা আর জমায়েতের আবহ, ঠিক তখনই সেই বিশাল ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল বার্তা ছড়িয়ে দিলেন এক তরুণী। প্রমাণ করলেন, ২১ জুলাই শুধুই রাজনীতির দিন নয়—এ দিন একেকজন সাধারণ মানুষের কাছে বেঁচে থাকার লড়াইয়েরও দিন।