বাংলাদেশে কয়েকদিন আটক থাকার পর দেশে ফিরেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৯৫ জন মৎস্যজীবী (Fishermen)। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁরা (Fishermen) ঘরে ফিরতে পেরেছেন। তবে দেশে ফেরার পরই শোনালেন তাঁদের (Fishermen) বাংলাদেশে আটক থাকার সময়কার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।
মৎস্যজীবীদের মধ্যে একজন, গোপাল মান্না, জানালেন, “ডিসেম্বরের ২০ তারিখ আমাদের বাংলাদেশের নৌসেনা ধরে নিয়ে যায়। পিছমোড়া করে বেঁধে আমাদের মাছগুলো নিয়ে চলে যায়। তারপর আমাদের আধার কার্ড চায়। এরপরে জামা-কাপড় খুলতে বাধ্য করে। উলঙ্গ অবস্থায় আমাদের ছবি তোলে। আমরা কিছু বলিনি, কারণ ভয় ছিল আরও মারধর করবে।”
তিনি আরও জানান, “আমাদের সামনে যাঁদের আগে ধরা হয়েছিল, তাঁদের এত মেরেছে যে শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। আমাদেরও পেটানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল।”
গোপাল বলেন, “বন্দি থাকাকালীন শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে। বলা হয়েছে, তোমাদের মা শেখ হাসিনা। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল নানা ধরনের মানসিক নির্যাতন। বাংলাদেশি বন্দিদের রোষের মুখেও পড়তে হয়েছে আমাদের।”
মৎস্যজীবীরা বলেন, তাঁদের ওপর নৌসেনার অত্যাচার এমন ছিল যে সেই স্মৃতি সহজে ভুলতে পারবেন না। তাঁদের মতে, বাংলাদেশি নৌবাহিনীর এই আচরণ অমানবিক। এই ঘটনা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৫ আগস্ট হাসিনা সরকার কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কার্যত ভারতে পালিয়ে আসেন। তারপর থেকেই তিনি ভারতে রয়েছেন। এই পরিস্থিতি ক্রমশ ভারত বিরোধী স্লোগাব উঠতে থাকে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস ও বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং একাধিক রাজনৈতিক নেতার মুখে বার বার ভারত বিরোধী স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়। তারই প্রভাবে ভারতের ৯৫ জন মৎস্যজীবীর ওপর পড়ল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে স্বাগত জানিয়েছিলেন গঙ্গাসগর মেলায়। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এই মৎস্যজীবীদের ওপর বাংলাদেশ অত্যাচার করেছে।