নির্বাচন কমিশনের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে রাজ্যের ভোট প্রস্তুতিতে শুরু হয়েছে তীব্র জট (Election Commission)। ব্লক লেভেল অফিসার (BLO) নিয়োগ নিয়ে কমিশনের নিয়মেই তৈরি হয়েছে ধন্দ। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে—BLO হতে গেলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ভোটার হতে হবে এবং হতে হবে সরকারি কর্মচারী। এছাড়া, কোনওভাবেই গ্রুপ ডি কর্মীরা এই কাজে অংশ নিতে পারবেন না (Election Commission)। অর্থাৎ ভোটার তালিকার সংশোধন বা সংযুক্তিকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন থেকে একেবারেই বাদ পড়ছেন আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্বাস্থ্য সহায়িকা-সহ বহু অভিজ্ঞ গ্রামপর্যায়ের কর্মী।
কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, গ্রুপ সি পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীরাই কেবল এই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন (Election Commission)। একইসঙ্গে শিক্ষকরা BLO হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ছে ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের (ERO) উপর।
ERO দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের বহু প্রত্যন্ত জেলায় এই দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক গ্রুপ সি সরকারি কর্মচারী নেই (Election Commission)। যার ফলে BLO নিয়োগে দেখা দিচ্ছে তীব্র সংকট। রাজ্যজুড়ে যে হারে ভোটার তালিকা সংশোধন, নাম অন্তর্ভুক্তি ও স্থানান্তর সংক্রান্ত কাজ এগোচ্ছে, সেখানে BLO-এর ঘাটতি অত্যন্ত বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে এই জটের মধ্যেই কমিশনের আরেকটি নির্দেশিকা কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তিকে ERO চাইলে BLO-র কাজের জন্য ‘সার্টিফিকেট’ দিতে পারেন। তবে এই ‘সার্টিফিকেট’ কারা দেবেন, কীভাবে দেবেন, তার কোনও স্পষ্ট গাইডলাইন নেই। ফলে এই নিয়মও থেকে যাচ্ছে কার্যত ধোঁয়াশায়।
অন্যদিকে রাজ্যে ইতিমধ্যেই বহু শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় প্রশাসনিক স্তরে অভিজ্ঞ কর্মীর অভাব প্রবলভাবে দেখা দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, সব মিলিয়ে ভোট প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য BLO-এর ঘাটতি নির্বাচন কমিশনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অবস্থায় রাজ্যজুড়ে একটাই প্রশ্ন—শেষ পর্যন্ত দক্ষ BLO কোথা থেকে আসবে? আর কমিশন নিজের ফাঁদে কি নিজেই পড়ে গেল?