ধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কলকাতায় আসছেন। তার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) হঠাৎই উড়ে গেলেন বেঙ্গালুরু। এ নিয়েই শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক জল্পনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন— প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসে সভা করবেন, অথচ বিজেপির একসময়কার সবচেয়ে চর্চিত মুখ দিলীপ ঘোষ সেই দিনই কেন রাজ্য ছাড়লেন?
শুক্রবার দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা রয়েছে। কিন্তু সেই সভার আমন্ত্রণপত্র পাননি দিলীপ ঘোষ। আর সভার ঠিক আগেই তাঁর বেঙ্গালুরু রওনা দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো শুরু হয়েছে— এটি কি তাঁর অভিমান?
কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh) জানালেন, তিনি শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের সঙ্গে দেখা করতে বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন। তাঁর কথায়, “অনেকদিন ধরে একটা মিটিং পেন্ডিং ছিল। চিঠি দিয়ে ডেট কনফার্ম করা হয়েছে। আজই দেখা করার দিন ঠিক হয়েছে। তাই যাচ্ছি। কাল ফিরব।”
কিন্তু আজই কেন, যখন প্রধানমন্ত্রী কলকাতায়? উত্তরে দিলীপ (Dilip Ghosh) স্পষ্ট জানালেন, “আজ আমার কলকাতায় কোনও কাজ নেই। প্রধানমন্ত্রী আসবেন, ভাষণ দেবেন। সেটা তো আমি মোবাইলেও শুনতে পারি (Dilip Ghosh)। ভাষণ শোনা কোনও কাজ নয়। কাজ যখন পার্টি দেবে, তখন করব।”
তাহলে কি তিনি অভিমান করেছেন? দিলীপ ঘোষ সোজা ভাষায় বললেন, “দিলীপ ঘোষ কোনওদিন অভিমান করেনি। ছোটবেলা থেকে কাজ করেছি, লোকের অভিমান ভেঙেছি।”
নিজের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়েও তিনি খোলাখুলি মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, “আমার মতো হাজার হাজার কর্মী পার্টিতে আছেন। পার্টি যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই দায়িত্ব দেবে। এখন আমার কোনও কাজ নেই। প্রধানমন্ত্রী কী ভাববেন সেটা তিনিই জানবেন।”
আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও দিলীপকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জানান, “পার্টি তিনবার ভেবেছে আমাকে ভোটে লড়তে হবে। দু’বার জিজ্ঞাসা করেছিল কোথায় লড়ব, আমি নাম বলেছিলাম, জিতেছিলাম। তৃতীয়বার কিছু জিজ্ঞাসা না করেই লড়তে বলেছিল, লড়েছি, হেরেছি। এবার পার্টির সিদ্ধান্তের উপর সব নির্ভর করছে।”
অন্যদিকে, ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। অনেকে বলছেন, আগামী নির্বাচনে এই ইস্যুই হবে শাসকদলের প্রধান হাতিয়ার। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের মতো আঞ্চলিক দলগুলোর কোনও আদর্শ নেই। তারা শুধু লোকাল ইস্যু নিয়েই রাজনীতি করে। দেশ ভাঙল কী রইল— এসব নিয়ে ভাবে না। বাংলার মানুষ অনেক চিন্তাশীল। পরিবর্তন হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
একদিকে যখন মোদীর সভা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন দিলীপ ঘোষের রাজ্য ছাড়াই এখন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর এই পদক্ষেপ কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি লুকিয়ে আছে অন্য কোনও বার্তা? এখন সেই উত্তরই খুঁজছে রাজনৈতিক মহল।