রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Dilip Ghosh)। ১৮ জুলাই, অর্থাৎ আগামীকাল দুর্গাপুরে তাঁর জনসভা ঘিরে ইতিমধ্যেই চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই জনসভায় উপস্থিত থাকবেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও (Dilip Ghosh), তবে কোনও ভিভিআইপি আসনে নয়— তিনি বসবেন দর্শকাসনে! এই মন্তব্য নিজেই করেছেন দিলীপ ঘোষ, আর তাঁর কণ্ঠে ছিল স্পষ্ট অনুযোগ ও একরাশ ক্ষোভ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ না পেয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। আলিপুরদুয়ারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা হোক কিংবা নেতাজি ইন্ডোরে হওয়া দলীয় সভা— কোথাও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তখন থেকেই জল্পনা ছড়ায় যে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) হয়তো ধীরে ধীরে দল থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে।
দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) নিজেও দিল্লি সফরে গিয়ে দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, এমনকি দলীয় কর্মসূচিতে বসার চেয়ারে জায়গাও দেওয়া হয়নি তাঁকে। তাঁর এই বক্তব্যে বঙ্গ বিজেপিতে তীব্র আলোড়ন দেখা দেয়। যদিও পরবর্তীতে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘একসাথে চলা’র বার্তা দেন, এবং তখনই খবর মেলে যে দিলীপ ঘোষ প্রধানমন্ত্রীর সভায় থাকবেন।
তবে দুর্গাপুরের সভা নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও সরকারি আমন্ত্রণ পাননি। তবুও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শুনতে তিনি যাবেনই, প্রয়োজনে দর্শকাসনে বসেই শুনবেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমন্ত্রণ পাইনি, কিন্তু কর্মীদের অনুরোধে যাচ্ছি। দেখা যাক, এখনও সময় আছে।”
এদিকে, বাঙালিদের উপর অন্যান্য রাজ্যে হওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা নিয়েও মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর প্রশ্ন, যাদের নিয়ে মমতা আন্দোলনে নেমেছেন, তারা আদৌ ভারতীয় নাকি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী? তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদে, জাল ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড তৈরি করে বাংলাদেশিদের ভারতীয় নাগরিক বানানো হচ্ছে। এই কার্ড নিয়েই তারা গোটা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ‘বাঙালি’ পরিচয়ে। এবং তাঁদের ভোটের সময় ব্যবহার করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের দায়িত্ব নিচ্ছেন বলে কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ।
এই বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে ফের রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভার প্রাক্কালে দিলীপ ঘোষের এই অবস্থান ও মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।